২০২২-২৩ সালে নীতি আয়োগের বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির লক্ষ্য ছোঁয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোয় জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু ব্যাটারি থেকে চার্জিং স্টেশন-সহ সহায়ক পরিকাঠামোর অপ্রতুলতা, সার্বিক ভাবে ক্রেতা টানার সহায়ক পরিবেশ কতটা তৈরি হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বারবার। আরও বেশি ক্রেতাকে বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনায় উৎসাহ দিতে আসন্ন বাজেটের জন্য একগুচ্ছ প্রস্তাব দিল সোসাইটি অব ম্যানুফ্যাকচারার্স অব ইলেকট্রিক ভেহিকল্স (এসএমইভি)। যার মধ্যে রয়েছে ফেম-২ প্রকল্পের ভর্তুকির মেয়াদ বৃদ্ধি, সব ধরনের বাণিজ্যিক গাড়িতেও ভর্তুকি দেওয়া, গাড়ির যন্ত্রাংশের জিএসটি হ্রাস ইত্যাদি।
সংগঠন সূত্রের খবর, এখন ফেম-২ প্রকল্পে দু’চাকা, ব্যক্তিগত চার চাকা, সরকারি বাস, কিছু তিন চাকার বাণিজ্যিক (বৈদ্যুতিক রিকশ বাদে) গাড়িতে ভর্তুকি মেলে। কিন্তু তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ। বিভিন্ন ধরনের গাড়ির ক্ষেত্রে ভর্তুকির অঙ্ক ও ঊর্ধ্বসীমাও আলাদা। এসএমইভি-র বক্তব্য, চাহিদা বাড়াতে কোনও সময় স্থির না-করে বরং গাড়ি বাজারের ন্যূনতম একটা অংশ বৈদ্যুতিক না-হওয়া পর্যন্ত ভর্তুকি চালানো জরুরি। যেমন, দু’চাকার গাড়ি বাজারের ২০% বৈদ্যুতিকে রূপান্তরিত হলে তার পর থেকে সেগুলির চাহিদা আপনা থেকেই বৃদ্ধির সম্ভাবনা। তখন আর ভর্তুকির দরকার হয়তোপড়বে না।
পাশাপাশি অন্যান্য সরকারি প্রকল্পের (রান্নার গ্যাস) মতো এই ভর্তুকি সরাসরি ক্রেতাকেই দেওয়ার আর্জি জানিয়েছে এসএমইভি। এখন ক্রেতা বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার সময়ে ভর্তুকি বাদে বাকি দাম দেন। সংশ্লিষ্ট গাড়ি সংস্থাকে পরে সরকারের থেকে ভর্তুকি আদায় করতে হয়। শিল্পের মতে, সেই টাকা পেতে সময় লাগে। সমস্যা তৈরি হওয়ায় সংস্থার চাপ বাড়ে। তাদের দাবি, ঠিক সময়ে ভর্তুকি না-মেলায় ২০২২-২৩ সালে নীতি আয়োগের বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির লক্ষ্য ছোঁয়া নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্র ভর্তুকি বণ্টনে দেরির জন্য গাড়ি সংস্থাগুলির অনিয়মের দিকে ইঙ্গিত করলেও, শিল্পমহল অবশ্য তা মানতে নারাজ।
বরং ভবিষ্যতে সব ধরনের বাণিজ্যিক গাড়ি, ট্রাক, ট্র্যাক্টরের ক্ষেত্রেও ভর্তুকি চালুর পক্ষে সওয়াল করেছে সংস্থাগুলি। সংগঠনটির বক্তব্য, অ্যাপ ভিত্তিক ট্যাক্সি পরিষেবা বাড়ছে। ফলে বাণিজ্যিক চার চাকার গাড়িও বৈদ্যুতিক হওয়া জরুরি। এ ছাড়া বাণিজ্যিক গাড়ি থেকে যথেষ্ট দূষণ ছড়ায়। ফলে সেগুলিকে পরিবেশবান্ধব করে তোলা দরকার। সেই সঙ্গে বৈদ্যুতিক গাড়িতে ৫% ও যন্ত্রাংশে (ব্যাটারি বাদে) ২৮% জিএসটির বদলে, সব ক্ষেত্রে ৫% কর বসানোর আবেদনও করেছে তারা। দাবি করেছে, চার্জিং স্টেশন গড়ার মূলধনী খরচের ৫০% ভর্তুকির। আর্জিতে বলা হয়েছে, এই গাড়ির ঋণ সহজলভ্য করতে তাকে অগ্রাধিকার ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত করা, সুদের হার কমানো এবং ব্যাটারি তৈরির সেলে আমদানি শুল্ক শূন্যেনামানোর কথাও।