মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র ফাইল চিত্র।
হাজার টাকা পর্যন্ত দামের পোশাকের জিএসটি ৫% থেকে বাড়িয়ে ১২% করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিএসটি পরিষদ। নতুন বছর থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র মনে করেন, অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করলে এর কুফল ভুগতে হবে দেশের অর্থনীতিকে। শুক্রবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর দাবি, বাড়তি কর আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্র জিএসটি বাড়াতে চাইলেও এ ক্ষেত্রে ফল হতে পারে বিরূপ। ফলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের উচিত ‘একতরফা’ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা।
কেন্দ্রের দাবি, সস্তা পোশাকের জিএসটি বাড়িয়ে বছরে বাড়তি ৭০০০ কোটি টাকা তোলা যাবে রাজকোষে। কিন্তু অমিতবাবু তাদের সঙ্গে সহমত নন। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ আপত্তি করেছিল। এটা কার্যকর হলে ভয়ঙ্কর সময় সামনে আসছে। কেন্দ্রের অনুমানের সঙ্গে আমি একমত নই। এতে লাভ নয়, বরং ক্ষতিই বাড়বে। অবিলম্বে জরুরি ভিত্তিতে জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডেকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’’ রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য, দেশে বস্ত্রশিল্পের সঙ্গে প্রায় ৫.৪ লক্ষ কোটি টাকার ব্যবসা জড়িয়ে। এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ৩.৯ কোটি মানুষের জীবিকা। তবুও অন্যান্য ক্ষেত্রে যেখানে লাভের পরিমাণ ১০-১৫ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করে, সেখানে বস্ত্রশিল্পে লাভ হয় ১%-৩%। তা সত্ত্বেও কর আদায় হয় বছরে ১৯-২১ হাজার কোটি টাকা। তাঁর মতে, বর্ধিত জিএসটি কার্যকর হলে অন্তত এক লক্ষ ছোট কারখানা বন্ধ হবে। সরাসরি কাজ হারাতে পারেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। অনুসারি ধরলে কর্মহীনের সংখ্যা ১৫ লক্ষও ছাপিয়ে যেতে পারে।
অমিতবাবুর আরও যুক্তি, বস্ত্রে শিল্পে ‘ইনভার্টেড ডিউটি স্ট্রাকচার’ সংশোধন করতে চাইছে কেন্দ্র। কিন্তু বাকি সমস্ত ক্ষেত্র এই সিদ্ধান্তের ফলে সমস্যায় পড়বে। আবার সমীক্ষা বলছে, ৬% জিএসটি বাড়লে ৩% চাহিদা কমতে পারে। ফলে চাপে পড়বে বস্ত্র শিল্প।