Amit Mitra

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সংবিধান লঙ্ঘনের তোপ অমিতের

তিন দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দাবি করেছিলেন, কোভিডের চিকিৎসার ওষুধ, যন্ত্রাংশ, অক্সিজেনের উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করা হোক।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২১ ০৫:৩৬
Share:

অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদীকে লেখা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির জবাব দিতে ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছিলেন কেন্দ্রের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এ বার তাঁকে পাল্টা ‘বাউন্সার’ দিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।

Advertisement

তিন দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে দাবি করেছিলেন, কোভিডের চিকিৎসার ওষুধ, যন্ত্রাংশ, অক্সিজেনের উপর থেকে জিএসটি প্রত্যাহার করা হোক। মোদী সেই চিঠির জবাব দেননি। তবে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সেই দাবি কার্যত খারিজ করে দিয়েছিলেন নির্মলা। এ বার রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই অমিত মিত্র নির্মলাকে চিঠি লিখে দাবি করলেন, অবিলম্বে জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকা হোক। তাঁর অভিযোগ, গত ছ’মাসে একবারও পরিষদের বৈঠক না-ডেকে কেন্দ্র সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। সংবিধানের ২৭৯এ অনুচ্ছেদ মেনে জিএসটি পরিষদ তৈরি হয়েছিল। তাই সংবিধান অনুযায়ীই তাকে চালাতে হবে। আর সেই সূত্রে পরিষদ পরিচালনার নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ত্রৈমাসিকে একবার করে বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু পরপর দু’টি ত্রৈমাসিকে একটিও হয়নি। অমিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘জিএসটি পরিষদের বৈঠক না-ডেকে এই যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অবমাননা করা হয়েছে। এর ফলে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে আস্থার অভাব দেখা দিতে পারে। ভবিষ্যতে নিয়মিত বৈঠক ডাকা উচিত।’’

শেষবার পরিষদের বৈঠক হয় গত বছর অক্টোবরে। তার পরে সাত মাস কেটে গিয়েছে। অতিমারির সঙ্কট ছিল ঠিকই। কিন্তু ভিডিয়ো কনফারেন্সেও আলোচনার চেষ্টা করা হয়নি। এর আগে পঞ্জাবের কংগ্রেস সরকারের অর্থমন্ত্রী মনপ্রীত সিংহ বাদলও জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকার দাবি তুলেছিলেন। বাদলের যুক্তি ছিল, কোভিডের ওষুধ, অক্সিজেন, চিকিৎসার যন্ত্রাংশ থেকে জিএসটি প্রত্যাহারের মতো বিষয় নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়া খুব দরকার। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দিল্লি, ছত্তীসগঢ়ও এই সমস্ত জিনিসের উপর থেকে জিএসটি তুলে নেওয়ার দাবি তুলেছে।

Advertisement

অমিতবাবু সীতারামনকে আরও একটি বিষয় মনে করিয়ে দিয়েছেন। তা হল, কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যগুলির প্রাপ্য জিএসটি ক্ষতিপূরণ খাতে ঘাটতিও উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছতে চলেছে। কেন্দ্রের অনুমান অনুযায়ীই, চলতি অর্থবর্ষে এই ঘাটতি ১.৫৬ লক্ষ কোটি টাকার বেশি হবে। কিন্তু সেই হিসেব কষার সময় অর্থনীতিতে কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কার প্রভাব ধরা হয়নি। অমিতবাবুর মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘাটতি ২ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছতে পারে। আর্থিক উপদেষ্টা সংস্থা আইসিআরএ আগেই জানিয়েছে, রাজ্যগুলির জিএসটি ক্ষতিপূরণ ঘাটতি ২.৭ থেকে ৩ লক্ষ কোটি টাকা হতে পারে।

মমতার চিঠির জবাবে সীতারামনের যুক্তি ছিল, জিএসটি প্রত্যাহার করে নিলে ওষুধ-অক্সিজেন প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি কাঁচামালে মেটানো করের টাকা ফেরত পাবে না। ফলে তাদের বেশি কর মেটাতে হবে। যার জেরে করোনার ওষুধ, যন্ত্রাংশ, অক্সিজেনের মতো জরুরি পণ্যের দাম বাড়বে। অর্থ মন্ত্রক সূত্র মনে করছে, মে মাসের শেষে জিএসটি পরিষদের বৈঠক ডাকা হতে পারে। কিন্তু তা যে যথেষ্ট উত্তপ্ত হতে চলেছে, সেটা এখনই স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement