—প্রতীকী চিত্র।
গত জুনে গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার বিপুল চড়ে গিয়েছিল মে মাসে রবি শস্য তোলার পরে বহু মানুষের হাতে কাজ না থাকায়। জুলাইয়ে ফের কৃষি শ্রমিকের চাহিদা বৃদ্ধির প্রভাবে গ্রামাঞ্চলের হাত ধরেই সারা দেশে বেকারত্বের হার কিছুটা কমল। কিন্তু স্বস্তি দিল না শহর। সেখানে ফের ৮% পেরিয়ে গিয়েছে কর্মহীনের হার।
বেসরকারি পরামর্শদাতা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা রিপোর্টকে উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমের খবর, গত মাসে সারা দেশে বেকারত্বের হার ৮.৪৫% থেকে কমে হয়েছে ৭.৯৫%। গ্রামাঞ্চলে তা ৮.৭৩% থেকে নেমেছে ৭.৮৯ শতাংশে। কিন্তু শহরে ৭.৮৭% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.০৬%। রিপোর্টে দাবি, দেশে বর্ষা কিছুটা দেরিতে ঢুকলেও ইতিমধ্যেই কৃষি জমির অর্ধেকের বেশি এর আওতায় চলে এসেছে। প্রাথমিক ঘাটতি পূরণ করে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪% বেশি। ফলে এ বছর কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। যা মূল্যবৃদ্ধির হার কমাতে পারে। বাড়াতে পারে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারকে। কৃষি ক্ষেত্রে বাড়তি কাজ তৈরি হচ্ছে। ফলে অন্যান্য গ্রামীণ ক্ষেত্রে রোজগারের খোঁজ কমেছে। সব মিলিয়েই কমেছে গ্রামে বেকারত্বের হার। কিন্তু শহরে কাজের বাজারে অংশগ্রহণের হার তো কম বটেই। কাজ খুঁজতে নেমে তা না পাওয়ার হারও গিয়েছে বেড়ে। যা আদতে সামগ্রিক অর্থনীতির দুর্বলতাকে স্পষ্ট করছে বলেই দাবি সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের।
সমীক্ষকদের ব্যাখ্যা, জুলাইয়ে গ্রামে বেকারত্বের হার কমা স্বাভাবিক। ফসল বোনার মরসুম শেষ হলে অগস্ট থেকে ফের তা মাথা তোলে। মে মাসে রবিশস্য তোলার পরেও কাজ কমে যায়। এ মাসে কী হয় সেটাই দেখার।
সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১%। যা সেই সময়ে ছিল চার দশকের সর্বোচ্চ। তা নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা কম হয়নি। লকডাউনে তা দুই অঙ্কে পৌঁছে যায়। সম্প্রতি কেন্দ্র বার বার দাবি করেছে, আর্থিক কর্মকাণ্ডে গতি ফেরার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজের বাজারও অতিমারির আগের জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। যদিও কোনও সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থার রিপোর্টে সেই লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। বহু সংস্থা নিয়োগ স্থগিত রেখেছে অর্থনীতি নিয়ে ঝুঁকি না কাটার কারণেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী বছর দেশে লোকসভা ভোট। ফলে তার আগে বেকারত্বের কাঁটায় শাসক দলের অস্বস্তি বহাল।