ফাইল চিত্র।
পর্যটন ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের সম্ভাবনা যে অসীম তা একাধিক বার মেনে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে তারা জানিয়েছে, একে কাজে লাগাতে গেলে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোর উন্নতি দরকার। ঠিক এই দিকে চোখ রেখেই কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্র, বড় শিল্প, ক্ষুদ্র-ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই), পরিকাঠামো এবং পরিষেবার পাশাপাশি পর্যটনকেও শিল্প সম্মেলনে পাখির চোখ করতে চাইছে রাজ্য। প্রচারের আলোয় আনতে চাইছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে। আগামী ২০-২১ এপ্রিল বেঙ্গল গ্লোবাল বিজ়নেস সামিট হবে।
প্রশাসনিক সূত্রের মতে, দেশের জিডিপি-তে ৬.৫% এবং রাজ্যের জিএসডিপি-তে ১২% অবদান রয়েছে পর্যটন ক্ষেত্রের। প্রাক্-করোনাকালে পশ্চিমবঙ্গে বছরে অন্তত ১৬ লক্ষ বিদেশি এবং ভিন্ রাজ্যের অন্তত ন’কোটি পর্যটকের আনাগোনা ছিল। সে-দিক থেকে রাজস্থান, কেরলের মতো রাজ্যকেও পিছনে ফেলেছিল বাংলা। আবার ছোট শিল্পের সঙ্গেও পর্যটনের যোগাযোগ নিবিড়। এই ক্ষেত্রে উৎপাদনের বৈচিত্র পর্যটকদের কাছে আকর্ষক বিষয়। তাই পর্যটনের সূত্রে এই ক্ষেত্রে আর্থিক গতিবিধি বাড়ার সুযোগ থাকে। সব মিলিয়ে তাই বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলি দিয়েই আসন্ন শিল্প সম্মেলনকে সাজাতে চাইছে নবান্ন।
প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বড়-মাঝারি-ছোট শিল্প, পরিকাঠামো ও পরিষেবা ক্ষেত্রে যে সম্ভাবনা রয়েছে, পর্যটনে তার থেকে কিছু কম নেই। বরং এই ক্ষেত্রটি গুরুত্ব পেলে শিল্পায়ন-কর্মসংস্থানের একটা সম্পূর্ণ বৃত্ত তৈরি করা সম্ভব। এগুলিকে সামনে রেখেই শিল্প সম্মেলনের পরিকল্পনা চলছে।’’
তৃতীয় তৃণমূল সরকারের ঘোষিত লক্ষ্য শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান। তাই আগামী বছরের শিল্প সম্মেলনের পরিকল্পনা এমন ভাবে করা হচ্ছে, যাতে তা সরকারের লক্ষ্য পূরণ করতে পারে। সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। সম্প্রতি নবান্নে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে শিল্প সম্মেলনে থাকার বার্তা দিয়েই রাজ্যের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন শিল্পপতি গৌতম আদানি। বড় শিল্পের মধ্যে তাজপুরের সমুদ্রবন্দর, ডেউচা পাঁচামি কয়লা খনি, তথ্যপ্রযুক্তির আওতায় ডেটা সেন্টার পাখির চোখ হয়ে উঠছে। এই ক্ষেত্রগুলিকে অনুকূল পরিবেশ দিতে বিভিন্ন নীতিতে যেমন বদল আনা হচ্ছে, একই ভাবে শিল্প দফতরের উপরে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে তৈরি হয়েছে বিশেষ পর্ষদ। বিনিয়োগকারীদের চাহিদা অনুযায়ী সরকারি সিদ্ধান্তের গতি বাড়ানোই এর অন্যতম লক্ষ্য। আর সম্ভাবনাময় পর্যটন ক্ষেত্রকে এই বৃত্তের বাইরে রাখতে চাইছে না নবান্ন।