gold

এ বারেও অক্ষয় তৃতীয়ার জৌলুস কাড়ল করোনা

এ বার দোকান খুললেও ক্রেতার আশায় বৃথাই বসে থাকলেন বহু দোকানি।

Advertisement

প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২১ ০৬:০৮
Share:

ক্যাপশন- ফের একই ছবি। সোনার দোকানে দেখা নেই ক্রেতার।

আগের বছর লকডাউনের জন্য অক্ষয় তৃতীয়ার দিন সোনার দোকান খুলতেই পারেননি গয়না ব্যবসায়ীরা। এ বার দোকান খুললেও ক্রেতার আশায় বৃথাই বসে থাকলেন বহু দোকানি। ছোট বিপণিগুলিতে ক্রেতার দেখা প্রায় মেলেনি। আর বড় দোকানে যেটুকু ব্যবসা হয়েছে তার সিংহভাগই ছিল গয়নার আগাম বরাত।

Advertisement

শুক্রবারের অক্ষয় তৃতীয়া তাই গত বছরের মতোই নিষ্প্রভ কাটল স্বর্ণশিল্পের। যে দিন ধনতেরসের মতোই গয়না কেনার হিড়িক দেখতে অভ্যস্ত কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য। কিন্তু অতিমারি ছবিটা বদলে দিয়েছে বলেই আদৌ বউনি হবে কি না, এই আশঙ্কা নিয়ে দুপুর ১২টায় দোকানের ঝাঁপ তুলেছিলেন অনেকে। তা সত্যি হয়েছে বহু ক্ষেত্রেই। একাংশ আবার দোকানই খোলেননি। সোনার গয়নার প্রাণ বৌবাজারের রাস্তা ছিল ফাঁকা।

বনগাঁর মাঝারি মাপের দোকানের মালিক বিনয় সিংহ বলেন, ‘‘স্বাভাবিক সময়ে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন ৪৫০ থেকে ৫০০ গ্রাম গয়না বিক্রি হয়। এ বার ২০ গ্রামও হয়নি। একই কথা জানালেন বেলঘরিয়ার ছোট দোকানের মালিক টগর পোদ্দার। তাঁর দাবি, ‘‘বাড়তে থাকা সংক্রমণে কাঁপছে মানুষ। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোচ্ছেন না। কে গয়না কিনবে?’’

Advertisement

কলকাতায় গয়নার পাইকারি বাজারেও বিক্রি তলানিতে ছিল বলে জানিয়েছেন উত্তর কলকাতার গরানহাটার পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন পাঁজা। তিনি বলেন, ‘‘এ বার আমাদের বাজারে অক্ষয় তৃতীয়ার উৎসব বন্ধ রেখেছি।’’

বৌবাজারে গয়নার দোকান গিনি এম্পোরিয়ামের মালিক এবং স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে জানান, ‘‘নিয়ম রক্ষার জন্য দোকান খুলেছিলাম। কেনাকাটা প্রায় কিছুই হয়নি।’’ তাঁর দাবি, এমনিতেই রাজ্যের নির্দেশ মতো দিনে মাত্র তিন ঘণ্টার বেশি দোকান খোলা রাখা যাচ্ছে না। তার উপর লোকাল ট্রেন বন্ধ। শহরের বাইরে থেকে কেউ আসছেন না। ইদের ছুটির জন্য এ দিন বাসও কম ছিল। তার উপরে আছে করোনার ভয়। তাই বিক্রি এত কম। সোনার চড়া দামও ক্রেতাদের নিরুৎসাহ করেছে বলে একাংশের মত।

তবে তুলনায় বড় দোকানগুলির অবস্থা মন্দের ভাল। তা-ও স্বাভাবিক অবস্থার তুলনায় বিক্রি মাত্র ২০ শতাংশের মধ্যেই ছিল, দাবি সেনকো গোল্ড অ্যান্ড জুয়েলার্সের সিইও শুভঙ্কর সেন-এর। তিনি বলেন, ‘‘কিছু ক্রেতার সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ করে রেখেছিলাম। ভিডিয়ো দেখে অনেকে গয়না পছন্দ করেছিলেন। এ দিন তাঁরাই এসেছিলেন বেশি। তবে কেউ কেউ দোকানে না-এসেও গয়না বুক করেছেন। পরে নিয়ে যাবেন।’’ হতাশ কল্যাণ জুয়েলার্সের এমডি রমেশ কল্যাণরমন। বলছেন, ‘‘সারা দেশে আমাদের মাত্র ২০% দোকান খোলা রেখেছিলাম। কেনাকাটা ছিল খুবই কম।’’ অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরীর অবশ্য দাবি, ‘‘ধরেই নিয়েছিলাম এ বার অক্ষয় তৃতীয়ায় ক্রোতারা আসবেন না। কিন্তু তা সত্ত্বেও যত জন এসেছেন উৎসাহিত বোধ করছি।’’

করোনার দ্বিতীয় কামড় গ্রামেও পড়ায় ব্যবসা নিয়ে চিন্তিত পিসি চন্দ্র অ্যান্ড সন্সের জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রশান্ত চন্দ্র। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘প্রথম ঢেউয়ের দাপট গ্রামাঞ্চল দেখেনি। তাই অতিমারির শুরুতে কলকাতার তুলনায় জেলার শো-রুম ভাল ব্যবসা করেছিল। কিন্তু এ বার গ্রামও আক্রান্ত। তাই চিন্তা বাড়ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement