সাইরাস মিস্ত্রির আনা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে টাটা গোষ্ঠীর বিমান সংস্থা এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া। ‘নিয়মের বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত খরচের’ বিপুল বহর নিয়ে অভিযোগ এনেছেন মিস্ত্রি। এয়ার এশিয়ার বিবৃতিতে আজ জানানো হয়েছে, তা নিয়ে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে সংস্থার কয়েক জন প্রাক্তন কর্তার বিরুদ্ধে। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-ও এই তদন্তের ভার নিতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।
এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ায় আর্থিক অনিয়ম নিয়ে টাটাদের দিকে গত সপ্তাহেই অভিযোগের তির ছুঁড়েছেন সাইরাস মিস্ত্রি। গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান পদ থেকে সরতে বাধ্য হওয়ার পরেই গত ২৫ অক্টোবর টাটা সন্স পরিচালন পর্ষদের সদস্যদের ই-মেল করে একগুচ্ছ অভিযোগ আনেন মিস্ত্রি। সেখানেই তিনি মালয়েশীয় সংস্থা এয়ার এশিয়া বারহাদের সঙ্গে চুক্তির সময়ে ২২ কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন নিয়ে দুষেছিলেন টাটা গোষ্ঠীকে। আজ বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিষয়টি ইতিমধ্যেই তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকেও বিষয়টি আলোচিত হয়েছে বলে সংস্থা ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে।
সাইরাস মিস্ত্রির অভিযোগের পরে বিমান মন্ত্রকও জানিয়েছে, তারা বিষয়টির উপর নজর রাখছে। এয়ার এশিয়াকে ঘিরে অভিযোগ কোন দিকে মোড় নেয়, সে ব্যাপারে তৎপর তারা। ব্যবস্থা নেওয়ার মতো পরিস্থিতি যদি তৈরি হয়, তা হলে তারা একটুও দেরি করবে না।
তবে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান এই মুহূর্তে মাঝপথে। সেই কারণে এখনই বিশদে কিছু জানাবে না এয়ার এশিয়া। কারণ, সে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত কর্মীরা ও এয়ার এশিয়ার প্রতি অবিচারের সম্ভাবনা থাকবে। কিন্তু তদন্তের কাজে কোনও গাফিলতি হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে তিন সংস্থা এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া, এয়ার এশিয়া বারহাদ ও টাটা সন্স। ২২ কোটি টাকার বেআইনি লেনদেন বা টাকা নয়ছয় করার প্রমাণ মিললে তা এই তিন সংস্থার কেউই বরদাস্ত করবে না বলেই জানানো হয়েছে। এয়ার এশিয়ার বিবৃতি আরও জানিয়েছে, অনৈতিক কাজকর্মের প্রমাণ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে-স্তরেই এ ধরনের লেনদেনের হদিশ মিলবে, সেখানেই কড়া হাতে তার মোকাবিলা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছে এয়ার এশিয়া। তিন সংস্থাই এ ব্যাপারে গোষ্ঠীর নিজস্ব নীতি মেনে চলায় দায়বদ্ধ বলেও দাবি জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাইরাস মিস্ত্রি তাঁর ২৫ তারিখের চিঠিতে এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ায় ২২ কোটি টাকার বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ এনে জানিয়েছিলেন, ফরেনসিক তদন্তে ওই ‘অনৈতিক’ কার্যকলাপ ধরা পড়েছে। ভারত ও সিঙ্গাপুরের কিছু ভুয়ো সংস্থার সঙ্গে এ ধরনের বেআইনি লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন মিস্ত্রি।
প্রসঙ্গত, টাটা গোষ্ঠীর সঙ্গে মালয়েশিয়ার এয়ার এশিয়া বারহাদের যৌথ উদ্যোগ এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়ায় টাটাদের হাতে রয়েছে ৪৯ শতাংশ শেয়ার।