ফাইল চিত্র
এয়ার ইন্ডিয়া (এআই) বিক্রির চেষ্টা ২০১৭ সালে শুরু হলেও অন্তত পাঁচ বার তা হোঁচট খেয়েছে। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থাটির ঋণ কাঁধে নেওয়ার শর্ত কিছুটা শিথিল করার পরে আগ্রহপত্র জমার প্রক্রিয়া শেষ করতে পেরেছে কেন্দ্র। টাটা গোষ্ঠী, আমেরিকার ফান্ড সংস্থা ইন্টারআপস-সহ বেশ কয়েকটি সংস্থা এআই কেনার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে দাবি তাদের। তবে সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, চলতি অর্থবর্ষে বিক্রির প্রক্রিয়া শেষ হওয়া কঠিন।
সরকারি মহলেরই দাবি, বিপুল রাজকোষ ঘাটতি মাথায় নিয়ে কেন্দ্র এখন এয়ার ইন্ডিয়া, বিপিসিএলের মতো সংস্থার বিলগ্নিকরণে মরিয়া। অতিমারির জেরে সেই পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই ব্যাহত হয়েছে। এই পথে ২.১ লক্ষ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা অনেক দূরে রয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় এআইয়ে সরকারের হাতে থাকা অংশীদারি বিক্রির প্রক্রিয়া আরও পিছিয়ে গেলে আয় বাড়ানোর চেষ্টা ধাক্কা খাবে আরও। উল্লেখ্য, কেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল এই অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থায় তাদের হাতের অংশীদারি বেচে ১.২০ লক্ষ কোটি টাকা তোলা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এবং এলআইসি-র (বাজারে নথিভুক্ত করে) মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে ৯০ হাজার কোটি সংগ্রহ। যদিও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির অল্প সংখ্যক অংশীদারি হাতবদল হওয়ার পরে চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত তাদের সিন্দুকে এসেছে মাত্র ১১,০০৬ কোটি টাকা।
২০০৭ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের সঙ্গে সংযুক্তিকরণের পর থেকেই আর্থিক ক্ষতি শুরু এআইয়ের। মোট ঋণের অঙ্ক এখন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০,০০০ কোটি টাকা। সে কারণেই বারবার বিক্রির প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছিল। আগ্রহপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা পিছিয়ে দিতে হয় করোনার জন্যও। শেষে সেই ঋণ কাঁধে নেওয়ার শর্ত কিছুটা শিথিল করে দরপত্রের প্রক্রিয়ায় সাড়া মিলেছে। কিন্তু বাকি রয়েছে বেশ কয়েকটি ধাপ। মাত্র তিন মাসে তা শেষ করা সম্ভব হবে কি না, সে ব্যাপারেই সন্দিহান সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
বিক্রির পথ
• গত ১৪ ডিসেম্বর ছিল এআই কিনতে আগ্রহপত্র জমার শেষ দিন। কেন্দ্রের বক্তব্য, বহু আগ্রহপত্র জমা পড়েছে।
• আগামী ৬ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচিত সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
• ভার্চুয়াল ডেটা রুমের (ভিডিআর) মাধ্যমে এআই সম্পর্কে তথ্য জানবে সংস্থাগুলি।
• পরবর্তী পর্যায়ে জানানো হবে এআইয়ের শেয়ার
কেনার শর্ত।
• তার পরে ডাকা হবে আর্থিক দরপত্র।
কেন্দ্রের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ বাকি। আর্থিক দরপত্র পেশ করার আগে আগ্রহী সংস্থাগুলিও বহু তথ্য জানতে চাইবে। সমস্ত কিছু শেষ করতে আগামী অর্থবর্ষ হয়ে যেতে পারে।’’