প্রতীকী ছবি।
ভারতে শুয়োরের মাংস এবং তা থেকে উৎপাদিত পণ্য রফতানির জন্য এই প্রথম আমেরিকাকে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্র। মঙ্গলবার আমেরিকার বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথরিন টায় বিবৃতিতে এ সংক্রান্ত চুক্তির কথা জানান। কিন্তু সেই ঘোষণার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়লেন এ দেশের শুয়োর পালনের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। তাঁদের বক্তব্য, বিভিন্ন রাজ্যের বহু সংখ্যক মানুষ এই ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষত উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বহু মানুষ ঘরে ঘরে শুয়োর পালন করেন। রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবং ছত্তীসগঢ়ের মানুষও। আমেরিকার বড় পুঁজির সঙ্গে মোকাবিলা করা তাঁদের পক্ষে সম্ভব হবে না। নর্থ-ইস্ট প্রোগ্রেসিভ পিগ ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মনোজ বসুমাতারির দাবি, ‘‘শুয়োর পালন ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের উপরে এই সিদ্ধান্তের বিরূপ প্রভাব পড়বে।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, কৃষক আন্দোলনের জেরে নাকাল হওয়া মোদী সরকারের কাছে এই ক্ষোভও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
তবে এ দিন ভারত থেকে ফের আমেরিকায় আম, বেদানা রফতানির পথ খুলেছে। মার্চ থেকে আলফনসো আম দিয়ে সেই রফতানি শুরু হবে। এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রোডাক্টস এক্সপোর্ড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিলের বক্তব্য, এতে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের চৌসা, ল্যাংড়া, দশেরি, ফজলি-সহ বিভিন্ন প্রজাতির আম সে দেশে রফতানি সম্ভব হবে।
যাবে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানার আম। ভারত শুয়োরের মাংস ছাড়াও আমদানি করবে পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত আলফালফা উদ্ভিদ ও চেরি। এ বিষয়ে আমেরিকার কৃষি দফতরের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রকের চুক্তি হয়েছে।
আগেও ভারত আমেরিকায় আম রফতানি করত। কিন্তু করোনার জন্য ২০২০ সাল থেকে আমেরিকার প্রতিনিধিরা লেনদেন সংক্রান্ত চুক্তি পুনর্নবীকরণের জন্য এ দেশে আসতে পারেননি। সেই বাধা দূর হওয়ার পরে গত বছরের ২৩ নভেম্বর কৃষিপণ্যের আমদানি-রফতানি ফের চালু করার জন্য চুক্তি চূড়ান্ত করে দু’পক্ষ। বাণিজ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে আমেরিকায় ৮০০ টন আম রফতানি করেছিল ভারত। যার আর্থিক মূল্য ২৭.৫ লক্ষ কোটি ডলার। পরের দু’বছরে তা আরও বেড়ে যথাক্রমে ৯৫১ টন (৩৬.৩ লক্ষ ডলার) এবং ১০৯৫ টন (৪৩.৫ লক্ষ ডলার) হয়।