ছবি সংগৃহীত।
সংসদে কৃষি বিল ও শ্রম বিধি পাশ হয়েছিল পিঠোপিঠি এবং বিতর্ক উস্কে দিয়ে। কৃষকেরা বিল খারিজের দাবিতে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন। কৃষি আইন তিনটি নিয়ে কোনও কমিটিতে আলোচনায় যেতেও নারাজ তাঁরা। একই ভাবে এ বার শ্রম বিধি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কোনও আলোচনায় যাবে না বলে জানিয়ে দিল ১০টি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন। দাবি তুলল চারটি শ্রম বিধিই স্থগিত রাখার। ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলল, তাদের সঙ্গে আলোচনা না-করে যে সব বিধি আনা হয়েছে এবং যেগুলি তারা মানছেই না, সেগুলি কার্যকর করার নিয়ম-কানুন তৈরির জন্য তাদের বৈঠকে ডাকার উদ্যোগ প্রহসন ছাড়া আর কিছু নয়।
সংসদে পাশ হওয়া চারটি শ্রম বিধি কার্যকরের নিয়ম তৈরির ব্যাপারে আলোচনার জন্য বুধবার ইউনিয়নগুলিকে ভিডিয়ো বৈঠকে ডেকেছিলেন শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার। সেখানে ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা অভিযোগ তোলেন, বিধিগুলি তাঁদের সঙ্গে কথা না-বলেই তৈরি হয়েছে। ফলে আবার গোড়া থেকে আলোচনা শুরু করুক সরকার। গঙ্গোয়ার অবশ্য এই প্রস্তাব উড়িয়ে দেন। ফলে ভেস্তে যায় বৈঠক।
ইউনিয়নগুলির দাবি, একটি বিধি পাশ হয়েছিল আগেই। কিন্তু বাকি তিনটি যখন সংসদে পেশ হয়, তখন বিরোধী সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন না। কিছু সাংসদকে সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে অধিবেশন বয়কটের কর্মসূচি পালন করছিলেন। তাড়াহুড়ো না করে বিলগুলি তাই পরে পেশ করার জন্য লিখিত ভাবে সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই কথায় কান দেওয়া হয়নি।
এআইইউটিইউসির সভাপতি শঙ্কর সাহা বলেন, ‘‘শ্রম বিধি নিয়ে ইউনিয়নগুলির সঙ্গে আলোচনার কোনও সৎ উদ্দেশ্য নেই সরকারের। পুরোটাই লোক দেখানো। শ্রমিকদের জন্য আইন, অথচ তাঁদের সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি, এই বদনাম কেন্দ্র নিতে চায় না। তাই এখন একটু ছুঁয়ে নিতে চাইছে। এই উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া যাবে না।’’ সিটুর সাধারণ সম্পাদক তপন সেন বলেন, ‘‘ইউনিয়নগুলির দাবি মানা না-হলে যৌথ ভাবে বড় আন্দোলনে পথে নামব। কাজের ক্ষেত্রে ওই সব বিধি না-মানার কর্মসূচিও গ্রহণ করব।’’ আইএনটিইউসির রাজ্য সভাপতি মহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘নতুন বিধিগুলিতে বর্তমান শ্রম আইনের প্রায় অর্ধেকই বদলেছে। আর সিংহভাগ ক্ষেত্রেই শ্রমিকদের স্বার্থহানির ব্যবস্থা করেছে সরকার। বিধিগুলি মানা সম্ভব নয়। এর বিরুদ্ধে যৌথ আন্দোলন হবে।’’
বিএমএস অবশ্য শ্রম বিধি খারিজ করেনি। তবে কিছু সংশোধনের দাবি তুলেছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিনয়কুমার সিংহ জানান, সমস্ত ঠিকা কর্মীকেই বিধির আওতায় আনতে বলেছেন তাঁরা। শ্রমিক কল্যাণ বিধিতে তাঁদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়েছে।