—প্রতীকী ছবি।
সোনার দাম ধনতেরসের পর থেকেই নতুন করে মাথা তুলতে শুরু করেছিল। বুধবার তা ফের বড় লাফ দিল। গড়ল নতুন নজির। কলকাতার বাজারে জিএসটি বাদে প্রতি ১০ গ্রাম পাকা সোনার বাট (২৪ ক্যারাট) এক ধাক্কায় ৯০০ টাকা বেড়ে এই প্রথম ৬৩,২০০ টাকায় পৌঁছেছে। জিএসটি ধরে পেরিয়েছে ৬৫ হাজারের মাইলফলক (৬৫,০৯৬ টাকা)। খুচরো পাকা সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম একই পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ৬৩,৫০০ টাকা। জিএসটি ধরে ৬৫,৪০৫ টাকা। হলমার্ক গয়নার সোনাও (২২ ক্যারাট, ১০ গ্রাম) প্রথম বার ৬০ হাজার টাকার উপরে উঠে পৌঁছেছে ৬০,৪০০ টাকায়। কর যোগ করে ৬২,২১২ টাকা।
ফলে বিয়ের ভরা মরসুমে মাথায় হাত পড়েছে গয়নার অনেক ক্রেতার। বিশেষত কেনাকাটা না করে যাঁদের উপায় নেই। প্রমাদ গুনছেন ব্যবসায়ীরাও। একাংশের আশা, বিয়ের কেনাকাটা পুরোদমে চলতে থাকায় দাম বাড়লেও আপাতত ব্যবসায় ভাটা পড়বে না। তবে বাকিদের প্রশ্ন, এই মরসুম কাটার পরেও দাম চড়া থাকলে কোথায় নামবে বিক্রি? ছোট-মাঝারি দোকান এবং তাদের গয়নার কারিগরদের বরাত নিয়েও দানা বাঁধছে দুশ্চিন্তা। গয়না ব্যবসায়ী বিনয় সিংহ আশঙ্কা প্রকাশ করে বলছেন, ‘‘আমাদের মতো মাঝারি মাপের ব্যবসার ৫০ শতাংশই জুড়ে তো রয়েছে শখের গয়নার বিক্রি। যা এখন খুবই কম। ফলে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা হচ্ছে।’’ তবে বিশেষজ্ঞদের দাবি, গয়না হোক বা পাকা সোনা, লগ্নির জন্য কেউ তা কিনে থাকলে উদ্দেশ্য সফল।
ক্যালকাটা জেম অ্যান্ড জুয়েলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অশোক বেঙ্গানির বক্তব্য, ‘‘১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিয়ের মরসুম চলবে। তার পর আবার ১৫ জানুয়ারি থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি। ফলে সেই সময় পর্যন্ত গয়নার বাজার মোটামুটি ভাল থাকবে বলেই আশা করছি।’’
অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর সমর দে জানান, গত সোমবার বিশ্ব বাজারে প্রতি আউন্স সোনার (২৪ ক্যারাট) দাম ছিল ২০১২.৮ ডলার। দু’দিনের মধ্যে তা ২০৪১.৪ ডলারে পৌঁছেছে। অনিশ্চিত বিশ্ব অর্থনীতিতে মূলত সুরক্ষিত লগ্নির জায়গা হিসেবে চাহিদা বৃদ্ধি দামকে ঠেলে তুলছে। যুদ্ধের মতো ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে এটাই দস্তুর। তার উপর মূল্যবৃদ্ধি চড়া। আর এক সুরক্ষিত বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে গণ্য হওয়া ডলারেও অনেক সময় দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে। আর বিশ্ব বাজারে সোনার চড়তে থাকা দামের প্রভাবই পড়ছে দেশে।