গৌতম আদানি। — ফাইল চিত্র।
সেবির লিখিত অনুমোদন ছাড়া আদানি গোষ্ঠীর হাতে আরআরপিআর-এর শেয়ার তুলে দেওয়া যাবে না, জানিয়েছিল এনডিটিভি। সেই দাবি শুক্রবার কার্যত উড়িয়ে দিল বিশ্বপ্রধান কমার্শিয়াল (ভিসিপিএল)। উল্টে আদানিদের এই সংস্থাটির দাবি, শেয়ার বরাদ্দ করতে সেবির সায় দরকার বলে মনে করেনা তারা। এতে কোনও আইন লঙ্ঘনেরও প্রশ্ন ওঠে না।
এনডিটিভির যুক্তি ছিল, চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাতা-প্রোমোটার রাধিকা ও প্রণয় রায়ের শেয়ার কেনাবেচা ও হস্তান্তরে সেবির নিষেধাজ্ঞা আছে। আরআরপিআর-এর শেয়ার নেওয়ার আগে তাই বাজার নিয়ন্ত্রকের সায় জরুরি। আদানিদের বক্তব্য, সেবির নির্দেশ ওই দু’জনের জন্য। আরআরপিআর-এ নিষেধাজ্ঞা নেই।এটি এনডিটিভির প্রোমোটার সংস্থা। ফলে এর অংশীদারি হাতে নিতে নিয়ন্ত্রকের সায় জরুরি নয়। বরং আরআরপিআর-এর যুক্তিকে ‘‘অর্থহীন, আইনগত ভাবে অসমর্থনযোগ্য এবং যুক্তিহীন’ বলে দাবি করেছে ভিসিপিএল। বলেছে, ওয়ার্যান্ট কার্যকর করার নোটিস অনুযায়ী অবিলম্বে তাদের দায় পূরণ করতে ও শেয়ার বরাদ্দ করতে বাধ্য।
আরআরপিআর ওই ওয়ার্যান্ট মারফতই ভিসিপিএল-এর থেকে ধার নিয়েছিল ২০০৯-ও। ওই চুক্তিতে বলা ছিল, নির্দিষ্ট সময়ে ঋণ শোধ না করলে সংস্থাটির ৯৯.৯% শেয়ারের (যা এনডিটিভির মোট শেয়ারের ২৯.১৮%) মালিক হবে ভিসিপিএল। যাকে সম্প্রতি কেনেন গৌতম আদানি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সংস্থাটির হাতে থাকা ওয়ার্যান্ট কার্যকর করতে নামেন আরআরপিআর-এর ঋণ শোধ না হওয়ার যুক্তিতে। আদানি গোষ্ঠী জানায়,এনডিটিভি-র ২৯.১৮% নিয়েছে তারা। খোলা বাজার থেকে আরও ২৬% কেনা হবে। সেবির নিষেধাজ্ঞার যুক্তি দিয়ে এই আগ্রাসী অধিগ্রহণ ঠেকাতেই মাঠে নামে এনডিটিভি। সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, যে ওয়ার্যান্ট অনুযায়ী আদানিদের এই চেষ্টা, তার আইনি বৈধতা নির্ভর করছে সেখানে লেখা চুক্তির শর্তের উপরে। আদানি এন্টারপ্রাইজ় বলেছে, ওই ওয়ার্যান্ট পাঠানো হয়েছে চুক্তির আওতায়। যা আরআরপিআর মানতে বাধ্য।
এ দিকে, এই দিনই বাজার থেকে হোলসিমের দুই ভারতীয় শাখা অম্বুজা সিমেন্ট এবং এসিসি-র ২৬% শেয়ার কিনতে ৩১,০০০ কোটি টাকার খোলা প্রস্তাব দিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সুইৎজারল্যান্ডের হোলসিমের ভারতীয় ব্যবসাকে কেনার কথা মে মাসে জানিয়েছিল তারা। বলেছিল, এতে খরচ করা হবে ১০৫০ কোটি ডলার (প্রায় ৮০,৮৫০ কোটি টাকা)। যার হাত ধরে আদানিদের হাতে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ছাড়াও যাবে অম্বুজা সিমেন্টের ৬৩.১% মালিকানা। অম্বুজাদের অন্যতম একটি শাখা এসিসি-ও।