Adani Group

রাজ্যে চার্জিং স্টেশন তৈরিতেও আদানিরা

জ্বালানির আমদানি খরচ ও দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। রাজ্যও একই পথে এগোচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যে আগে দু’দফায় যৌথ উদ্যোগে মোট ১০৪টি চার্জিং স্টেশন গড়ার বরাত দিয়েছে বণ্টন সংস্থা।

Advertisement

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৫৯
Share:

গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।

রাজ্যের একাংশে প্রাকৃতিক গ্যাস বণ্টনের ব্যবসায় আগেই লগ্নি করেছে আদানি গোষ্ঠী। এ বার রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বৈদ্যুতিক গাড়ির চার্জিং স্টেশন তৈরিতেও পা রাখতে চলেছে তারা। তবে এই দুই ক্ষেত্রে শিল্পপতি গৌতম আদানির পৃথক দু’টি সংস্থা ব্যবসা করবে। সরকারি সূত্রের খবর, চার্জিং স্টেশনের পরিকাঠামো গড়তে বণ্টন সংস্থার ডাকা তৃতীয় দফার দরপত্রের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যোগ্যতামান অর্জন করেছে আদানি টোটাল এনার্জিস। এর আগে যেমন বরাত পেয়েছিল রিলায়্যান্স, কয়েকটি স্টার্ট-আপ এবং অন্য কিছু সংস্থা।

Advertisement

জ্বালানির আমদানি খরচ ও দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। রাজ্যও একই পথে এগোচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যে আগে দু’দফায় যৌথ উদ্যোগে মোট ১০৪টি চার্জিং স্টেশন গড়ার বরাত দিয়েছে বণ্টন সংস্থা। স্টেশনগুলি হবে বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা ও পর্যটন বিভাগের অধীন পথসাথির খালি জায়গায়।

তৃতীয় দফায় ওই সমস্ত সংস্থার জায়গার পাশাপাশি, বিভিন্ন পুরসভায় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কিছু উদ্বৃত্ত জমিকে চিহ্নিত করে ১৩২টি স্টেশন গড়ার জন্য দরপত্র চেয়েছিল বণ্টন সংস্থা। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা তাতে সাড়া দেয়। বণ্টন সংস্থা সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত প্রযুক্তিগত ও আর্থিক দরপত্র মিলিয়ে এই দফায় ৮৪টি স্টেশন গড়ার জন্য বিভিন্ন সংস্থার প্রস্তাব যোগ্যতামান অর্জন করেছে। সেই তালিকায় অধিকাংশ বরাতের প্রস্তাব দিয়েছে আদানি টোটাল। ফরাসি সংস্থা টোটাল এনার্জিসের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে সংস্থাটি তৈরি করেছে আদানিরা। পুজোর ছুটির শেষে সরকারি দফতর খুললে তাদের ও অন্যান্য সংস্থাগুলিকে বরাত দেবে বণ্টন সংস্থা। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই রাজ্যে তাজপুর বন্দর গড়ার দায়িত্বও পেয়েছে আদানি গোষ্ঠী।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, চার্জিং স্টেশনের ওই তালিকায় সবচেয়ে বেশি সাড়া মিলেছে দুর্গাপুর ও হলদিয়া অঞ্চলে। এ ছাড়া নিউটাউন, হাওড়া, বজবজ, ঘাটাল, শালবনী, কাটোয়া, কাঁচরাপাড়া, আসানসোল, চন্দ্রকোণা, রিষড়া, চালসা, ইসলামপুর, ইটাহার, বনগাঁ, গাইঘাটাও রয়েছে। আদানিদের যৌথ সংস্থাটি উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন স্টেশনের বরাতের যোগ্যতামান অর্জন করেছে। প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান অয়েলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে বর্ধমানে গাড়ি (সিএনজি) এবং রান্না ও শিল্পের (পিএনজি) জ্বালানি ব্যবসায় লগ্নি করেছে আদানি গোষ্ঠী। পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ক্ষেত্র যে রিলায়্যান্সের মতোই তাদের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ, সেই বার্তা আগেও স্পষ্ট করেছে আদানিরা।

প্রসঙ্গত, চার্জিং স্টেশনের জায়গা দিচ্ছে বিদ্যুৎ বণ্টন, সংবহন সংস্থা, পথসাথি ও পুরসভা। ১১ কেভি-র লাইন টানা থেকে ট্রান্সফর্মার বসানো-সহ গোটা বিদ্যুৎ পরিকাঠামো গড়ে দিচ্ছে বণ্টন সংস্থা। বিভিন্ন স্থানের প্রেক্ষিতে এই খাতে একটি স্টেশনের জন্য গড়ে খরচ ৭.৫ লক্ষ টাকা। যন্ত্র-সহ বাকি পরিকাঠামোর মূলধনী লগ্নি ও তার রক্ষণাবেক্ষণ করবে বরাতপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থাগুলি। বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য বণ্টন সংস্থাকে বরাতে প্রস্তাবিত নির্দিষ্ট খরচও দেবে তারা। সূত্রের খবর, বণ্টন সংস্থা সেই ন্যূনতম দাম ১ টাকা বলেছিল। এই দফায় বিভিন্ন জায়গার ক্ষেত্রে ১-৫.৫০ টাকা পর্যন্ত দামের প্রস্তাব দিয়েছে ‘সফল’ সংস্থাগুলি। সর্বোচ্চ দরের প্রস্তাব এসেছে দীঘা-মন্দারমণি থেকেও।

যদিও আগের দফায় বরাত দেওয়া স্টেশনগুলি নির্মাণের অগ্রগতি যথেষ্ট নয়। সূত্রের খবর, বৈদ্যুতিক গাড়ি আগে নাকি চার্জিং পরিকাঠামো, এ নিয়ে দ্বন্দ্ব তার অন্যতম কারণ। এখন বরাত পাওয়ার পরে আদানি টোটাল কতটা দ্রুত স্টেশনগুলি গড়তে উদ্যোগী হয়, সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement