এ বার নতুন করে শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করল আদানি গোষ্ঠী। ফাইল ছবি।
হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্টের জেরে গত ফেব্রুয়ারিতে দ্বিতীয় দফায় শেয়ার (এফপিও) বিক্রি করে পুঁজি সংগ্রহের পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছিল আদানি গোষ্ঠীর প্রধান সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজ়েসকে। এ বার নতুন করে শেয়ার বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করল সংস্থাটি। সঙ্গে বিদ্যুৎ সংবহন সংস্থা আদানি ট্রান্সমিশনও। দুই সংস্থা মিলিয়ে মোট ২১,০০০ কোটি টাকা বাজার থেকে তুলবে। আগামী ২৪ মে একই উদ্দেশ্যে বৈঠকে বসবে গোষ্ঠীর আর এক সংস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি। সূত্রের খবর, ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য নতুন করে আর ঋণ বাড়াতে চাইছে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। বরং ঋণের বোঝা কমিয়ে ফিরে পেতে চাইছে লগ্নিকারীদের আস্থা। আর পুঁজি সংগ্রহের জন্য কাজে লাগাতে চাইছে অন্যান্য প্রক্রিয়া।
শনিবার শেয়ার বাজারগুলিকে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস জানিয়েছে, নির্বাচিত প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নিকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রি করে ১২,৫০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে তারা। আদানি ট্রান্সমিশন জানিয়েছে, একই প্রক্রিয়ায় তারা ৮৫০০ কোটি টাকা তুলবে। দুই সংস্থার পর্ষদই এ দিন এই পরিকল্পনায় সম্মতি দিয়েছে। সূত্রের খবর, ইউরোপ এবং পশ্চিম এশিয়ার লগ্নিকারী সংস্থাগুলি শেয়ার কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
গত ২৪ জানুয়ারি আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। সেখানে দাবি করা হয়, বেআইনি ভাবে এবং হিসাবের খাতায় কারচুপি করে গত এক দশক ধরে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে চলেছে আদানি গোষ্ঠী। বিভিন্ন দেশ থেকে ভুয়ো সংস্থার মাধ্যমে গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থায় টাকা ঢালার দাবিও করা হয়। অভিযোগের তির ছিল মূলত গৌতম আদানির দাদা বিনোদের দিকে। এই ঘটনার জেরে আদানিদের সমস্ত সংস্থার শেয়ারে বড় ধস নামে। রিপোর্ট প্রকাশের পরে প্রায় চার মাস পার হয়ে গেলেও শেয়ারগুলির দর আগের জায়গায় ধারেপাশে পৌঁছতে পারেনি। আদানিরা অবশ্য সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এরই মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে এফপিও-র মাধ্যমে ২০,০০০ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা করেছিল আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস। সমস্ত শেয়ারের জন্য আবেদনও জমা পড়ে। কিন্তু সেই সময়ে ওই কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসে সংস্থাটি। ফেরত দিয়ে দেওয়া হয় লগ্নিকারীদের টাকা। এ বার নতুন করে পুঁজি সংগ্রহের পদক্ষেপ শুরু করল গোষ্ঠীর বিভিন্ন সংস্থা। তবে বাজার সূত্রের খবর, ফেব্রুয়ারিতে আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস এক একটি শেয়ার ৩১১২-৩২৭৬ টাকায় বিক্রি করতে চাইলেও এ দফায় সম্ভবত ১৯৬৫ টাকার বেশি পাওয়া মুশকিল। শুক্রবার বাজার বন্ধ হওয়ার সময়ে সংস্থার শেয়ার দর তেমনই ছিল। আদানি ট্রান্সমিশনের শেয়ার দর ৮৮৫ টাকা।
হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টের জেরে ধাক্কা খাওয়ার পরে লগ্নিকারীদের আস্থা ফেরাতে একের পর এক পদক্ষেপ করছে আদানিরা। গত মার্চে আমেরিকার লগ্নিকারী সংস্থা জিকিউজি পার্টনারসকে শেয়ার বিক্রি করে মোট ১৫,৪৪৬ কোটি টাকা তুলেছিল গোষ্ঠীর চার সংস্থা। ২০২৪ সালে মেয়াদ শেষ হতে চলা ঋণপত্রের দেনাও আগাম মিটিয়ে ধার কমানোর কথা জানিয়েছে আদানি গোষ্ঠী।