প্রতীকী ছবি।
নতুন লগ্নির দেখা নেই। শিল্প অধরা। তাই তৈরি অফিসে জায়গা নেওয়ার খরিদ্দারও নেই কলকাতায়।
উপদেষ্টা সংস্থা সিবিআরই ইন্ডিয়া-র পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছর জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে দেশে মোট যত জায়গা অফিসের জন্য বিক্রি বা ভাড়া দেওয়া হয়েছে, তার মাত্র ১% কলকাতায়! শেষ বেঞ্চে সঙ্গী বলতে শুধু কোচি। দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু তো বটেই, এ বিষয়ে কলকাতাকে বহু যোজন পিছনে ফেলে দিয়েছে পুণের মতো শহরও।
পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, নোট নাকচের ধাক্কা আর তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের ডামাডোলকে পাশ কাটিয়ে ছয় শহরে ছন্দে ফিরছে অফিস তৈরির জায়গার ব্যবসা। ব্যতিক্রম কলকাতা। তার ঠাঁই হয়েছে সকলের পিছনে।
সিবিআরই ইন্ডিয়া-র অন্যতম কর্তা রাম চাঁদনানি বলেন, ‘‘সামাজিক পরিকাঠামো, দক্ষ মানবসম্পদ থাকা সত্ত্বেও লগ্নি টানার ক্ষেত্রে মলিন ভাবমূর্তির কারণেই পুণের মতো ছোট শহরের থেকেও পিছিয়ে পড়ছে কলকাতা। আর, এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে রাজ্যকেই।’’ নাইট ফ্র্যাঙ্ক, কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড, সিরিলের মতো উপদেষ্টা সংস্থারও দাবি, বিনিয়োগ আর উন্নয়নে টানের ছবিই ফুটে উঠছে অফিস স্পেসের তলানিতে ঠেকা চাহিদায়। শিল্পমহলের এক প্রতিনিধির প্রশ্ন, ‘‘লগ্নি নেই। নতুন শিল্প নেই। অফিসের জায়গার চাহিদা তৈরি হবে কোথা থেকে?’’
সবার নীচে
জানুয়ারি থেকে মার্চে দেশে অফিসের জন্য বিক্রি বা ভাড়া হয়েছে ৮০ লক্ষ বর্গ ফুট জায়গা। কোন শহরে কত—
•
দিল্লি ও সংলগ্ন অঞ্চল ১৯%
•
মুম্বই ১৮%
•
বেঙ্গালুরু ১৮ %
•
হায়দরাবাদ ১৬%
•
পুণে ১৪%
•
চেন্নাই ১৩%
•
কলকাতা ১%
•
কোচি ১%
তথ্যসূত্র: সিবিআরই ইন্ডিয়া
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে গত বছরের ওই একই সময়ের তুলনায় দেশে অফিস লিজ বা ভাড়া নেওয়া বেড়েছে ৮%। মোট লেনদেনের ৩৭% তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের দখলে। ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান নিয়েছে ২১%। উৎপাদন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত গবেষণা কেন্দ্রগুলি নিয়েছে ১৮%। এই তিন ক্ষেত্রেই অন্য ছয় শহরের থেকে অনেক পিছিয়ে কলকাতা।
চাহিদার এই অভাব ছাপ ফেলছে জোগানের ক্ষেত্রেও। ২০১৭ সালের প্রথম তিন মাসে দেশে তৈরি হয়েছে ৩০ লক্ষ বর্গ ফুটেরও বেশি অফিস স্পেস। কিন্তু এ শহরে চাহিদার আকালে নতুন প্রকল্প তৈরির কাজে হাত দিতে ভরসাই পাচ্ছে না নির্মাণ সংস্থাগুলি। পরিস্থিতি এতটাই বেহাল যে, অনেক ক্ষেত্রে কাজের গতি ঢিমে করে দেওয়া হচ্ছে নির্মীয়মাণ প্রকল্পে। পিছোনো হচ্ছে শেষ করার সময়সীমা।