মেয়েদের মধ্যে বাড়ছে ধার নিয়ে ব্যবসা খোলার আগ্রহও। প্রতীকী ছবি।
করোনা কাটিয়ে যত ছন্দে ফিরছে অর্থনীতি, ততই বাড়ছে ঋণ নেওয়ার আগ্রহ। আর সেই বৃত্তে আরও বেশি করে পা রাখছেন মহিলারা। ঋণগ্রহীতাদের টাকা শোধের বিষয়টি মূল্যায়ন করে যে সংস্থা, সেই ট্রান্স ইউনিয়ন সিবিলের রিপোর্টেই স্পষ্ট এই তথ্য। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, তামিলনাড়ুতে সবচেয়ে বেশি মহিলা ঋণগ্রহীতা (৯১.৭ লক্ষ) রয়েছেন। তবে তাঁদের সংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক পশ্চিমবঙ্গে। সব মিলিয়ে ধারের অঙ্ক মোট ১৬ লক্ষ কোটি টাকা। সব থেকে বড় কথা, সিবিলের রিপোর্ট অনুযায়ী পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ঋণ শোধের হার ভাল। ফলে তাঁদের ধার দেওয়ার ঝুঁকি কম।
এমনিতে বাড়ি-গাড়ি বন্ধক রেখে নেওয়া ঋণকে সুরক্ষিত বলা হয়। কারণ, গ্রাহক ধার শোধে ব্যর্থ হলে ঋণদাতা ওই সম্পত্তি নিয়ে নেয়। সিবিল জানাচ্ছে, তার বাইরেও এখন নিজেদের ইচ্ছা পূরণের জন্য ব্যক্তিগত বা ভোগপণ্য ঋণ নিচ্ছেন বহু মহিলা। গত বছর মোট ধারের এক চতুর্থাংশের বেশি ছিল এমন ঋণ। ধার নেওয়ার আর একটি বড় কারণ কৃষি কাজ।
মেয়েদের মধ্যে বাড়ছে ধার নিয়ে ব্যবসা খোলার আগ্রহও। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, সমস্ত শিল্প ঋণের মধ্যে মহিলাদের ভাগ বেড়ে হয়েছে ৩২%। যদিও সামগ্রিক ভাবে এখনও ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই পিছিয়ে তাঁরা। মোট ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে অংশীদারি ২৮%। তার ৩৪% প্রথমবার ধার নিয়েছেন। তবে পুরুষ ঋণগ্রহীতাদের ৫১% যেখানে ক্রেডিট স্কোরের (ঋণের ঝুঁকির মূল্যায়ন) ভিত্তিতে প্রথম সারি ‘প্রাইমে’ (যাঁরা শোধ করেন ভাল) রয়েছেন, সেখানে মহিলাদের ক্ষেত্রে তা ৫৭%। অর্থাৎ, বেশিরভাগ মহিলাই টাকা শোধে বেশি তৎপর। সামগ্রিক ভাবে ৮.০৬ কোটি মহিলা ২০২২ সালে ঋণের আবেদন করেছিলেন, পেয়েছেন ৭.২৭ কোটি।
মেয়েদের ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি স্পষ্ট হয়েছে এই সংক্রান্ত তথ্যপ্রদানকারী ক্রিফ হাইমার্কের তথ্যেও। তারা বলছে, ২০২২-এর ডিসেম্বরে খুচরো ঋণে মহিলাদের ভাগ ২৬%। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে ছিল ২৫.৩%। সামগ্রিক ভাবে ঋণের বাজারে তাদের ভাগ বেড়েছে ২৫%।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ধারা বহাল থাকা জরুরি। যত বেশি মহিলা প্রথাগত লেনদেনের জগতে আসবেন, দেশের অর্থনীতি তত গতি পাবে। কিন্তু রাস্তাটা সব ক্ষেত্রে মসৃণ নয়। বিশেষত কোভিডে যেহেতু কাজের বাজারে মহিলারাই ধাক্কা খেয়েছেন বেশি। যদিও সেই তুলনায় ঋণের পরিসংখ্যানে তাঁরা উন্নতি করেছেন। এটা বহাল থাকলে লাভবান হবে অর্থনীতি।