এআইএবির দাবি, বিএসএনএল কার্যত আইসিইউতে। ফাইল ছবি
সপ্তাহখানেক আগে এক বৈঠকে বিএসএনএলের কর্মী ও অফিসারদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন টেলিকমমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বলেছিলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থাকে বাঁচাতে ‘সরকারি ঢিলেঢালা মনোভাব’ ছেড়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। নয়তো ধরানো হবে স্বেচ্ছাবসর। এ বার বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রীকে পাল্টা চিঠি দিল সংস্থার কর্মী-অফিসারদের সংগঠন এইউএবি। বিএসএনএলের ৪জি পরিষেবা চালুর ব্যাপারে ‘অস্বাভাবিক’ দেরির জন্য সরাসরি কেন্দ্রকে দায়ী করল তারা।
এআইএবির দাবি, বিএসএনএল কার্যত আইসিইউতে। এখনও ৪জি পরিষেবা চালু করা যায়নি। প্রতিযোগী সংস্থাগুলি ৫জি চালুর দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়ায় বিপদ আরও বেড়েছে। বেসরকারি সংস্থাগুলি বিদেশি প্রযুক্তির বরাত দিলেও বিএসএনএলকে দেশীয় প্রযুক্তিই ব্যবহার করতে হবে বলে পরিষ্কার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে বিএসএনএল পিছিয়ে তো পড়ছেই, সেই সঙ্গে অপরীক্ষিত প্রযুক্তির পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করে তাকে ‘গিনিপিগ’ বানানো হচ্ছে। মন্ত্রী অবশ্য সেই বৈঠকে দ্রুত ৪জি পরিষেবা চালু এবং ৫জির জন্য তোড়জোর শুরুর বার্তাও দেন। কিন্তু সংগঠনের অভিযোগ, সংস্থার সিএমডি পি কে পুরওয়ার এর আগে স্বাধীনতা দিবসে ৪জি চালুর পরিকল্পনার কথা জানালেও তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় ৫জি তো আকাশকুসুম বিষয়!
মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি-সহ গোটা বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি এইউএবি বৈঠকে বসেছিল। সেখানে ৪জি পরিষেবা চালুতে দেরির বিষয়ে বিশেষ প্রস্তাব পাশ করেছে তারা। মন্ত্রীকে চিঠিতে তা জানিয়েছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান চন্দেশ্বর সিংহ এবং আহ্বায়ক পি অভিমন্যু। তাঁদের বক্তব্য, ২০১৯ সালে পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের সময় থেকে ৪জির আশ্বাস দিয়ে এলেও তা এখনও চালু করতে পারেনি কেন্দ্র। এখনই তা চালু করা না গেলে বিএসএনএলের পুনরুজ্জীবন অকল্পনীয়। যদিও তার কোনও দিশা দেখা যাচ্ছে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত গবেষণা সংস্থা সি-ডটের সঙ্গে জোট বেঁধে বিএসএনএলের ব্যবহারের জন্য দেশীয় প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশ তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছিল টিসিএস এবং তেজসকে। কিন্তু যন্ত্রের দামে টিসিএস রাজি হয়নি বলেই জল্পনা। এইউএবির অভিযোগ, এর ফলে যন্ত্র কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। মন্ত্রী বেসরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টক্কর নেওয়ার কথা বললেও সংগঠনটির বক্তব্য, প্রযুক্তি ও পরিকাঠামোর সমান মঞ্চটাই এখনও তৈরি হয়নি! তা করতে হলে বিএসএনএলকেও বিশ্ব মানের প্রযুক্তি ব্যবহারে সায় দিতে হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তকমার বদলে সরকারি বিভাগে পরিণত করতে হবে সংস্থাকে।