শনিবার ছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট কলকাতার (আইআইএমসি) ৫৮তম বার্ষিক সমাবর্তন। ফাইল ছবি।
মা-বাবাকে সপ্তাহে অন্তত দু’বার ফোন করতে হবে। বার্তা (মেসেজ) পাঠালে হবে না— পড়ুয়াদের উদ্দেশে পরামর্শ দিলেন বিজ্ঞাপন দুনিয়ার খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব তরুণ রাই।
শনিবার ছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট কলকাতার (আইআইএমসি) ৫৮তম বার্ষিক সমাবর্তন। সেখানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে নিজের হরেক অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন রাই। কাজের জগতে ম্যানেজমেন্ট শিক্ষার প্রয়োগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবন সংক্রান্ত বেশ কিছু পরামর্শও দেন। দেন অভিভাবকদের প্রতি কর্তব্য পালনের বার্তাও। তখন হাততালিতে ফেটে পড়ে সমাবর্তন সভাস্থল।
আইআইএমের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আলোচনায় সাধারণ ভাবে প্রাধান্য পায় পেশাগত ক্ষেত্রই। রাইয়ের বক্তব্যেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কর্মজীবনে একের পর এক সিঁড়ি চড়তে গিয়ে কোথাও হোঁচট খাওয়া, তা থেকে দ্রুত শিক্ষা নেওয়া, নতুন কাজকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করা, আবার পছন্দের পুরনো বিজ্ঞাপন জগতেই ফেরত— নিজের পেশাদার জীবনের এই সমস্ত অভিজ্ঞতাই হবু পেশাদারদের সামনে তুলে ধরেছেন তিনি। সঙ্গে দিয়েছেন কাজের সঙ্গে ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্যের বার্তাও।
ভারত ও বিশ্বের আঙিনার পাশাপাশি পেশাদার জীবনের দু’বছর কলকাতাতেও কাটিয়েছেন রাই। কর্পোরেট জগতের সেই পরিচিত ব্যক্তিত্ব এ দিন বলেছেন, পছন্দের কাজকেই পেশা হিসেবে অগ্রাধিকার দিতে হবে। চটপটে হওয়া, দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি মুছে ফেলতে হবে ব্যর্থতার ভয়। সাফল্যের জন্য দলগত কাজকে গুরুত্ব দিয়ে তাঁর আরও বার্তা, নেতৃত্ব দিলে দলের উপরে আস্থা রাখতে হবে। সরাতে হবে নিরাপত্তাহীনতা। সবশেষে তাঁর পরামর্শ, প্রথম বেতন হাতে পেয়েই একটি এসআইপি-তে লগ্নি করুন পড়ুয়ারা। জীবনের অঙ্গ হোক কোনও খেলা বা শখও। নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। যোগাযোগ রাখতে হবে বন্ধুদের সঙ্গে। আর সপ্তাহে অন্তত দু’বার মা-বাবাকে ফোন করতেই হবে।
বক্তৃতা শুনে উচ্ছ্বসিত ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি উত্তীর্ণ পড়ুয়ারা। তাঁদের অন্যতম অভিলাষ মাজি বলেন, ‘‘ওঁর কথা শুধু প্রথাগত কর্পোরেট পরামর্শ ছিল না। নমনীয় ভাবে পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনের ভারসাম্য রাখার কথা বলেছেন তিনি। আমাদের প্রজন্ম হয়তো ভাবি, বার্তা পাঠালেই হবে। কিন্তু মা-বাবা গলার স্বর শুনতেই আগ্রহী।’’