—প্রতীকী চিত্র।
দেশে অশোধিত তেল-গ্যাস উৎপাদনের অন্যতম বাজি এখন উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর। যেখানে বেশ কয়েক বছর ধরে উত্তোলনের কর্মকাণ্ড এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওএনজিসি। তবে বাণিজ্যিক ভাবে সেই জ্বালানি পেতে যে আরও কয়েক বছর অপেক্ষা করতে হবে, মঙ্গলবার সংসদে তা স্পষ্ট হল কেন্দ্রের দেওয়া লিখিত উত্তরে।
প্রকল্পের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চেয়েছিলেন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ জহর সরকার। প্রশ্ন ছিল, অশোকনগর ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে তেল খনন এবং উত্তোলন প্রকল্পের কাজ কত দূর? বাণিজ্যিক ভাবে তাকে কাজে লাগানোর জায়গায় পৌঁছতে আর কত সময় লাগবে? লিখিত উত্তরে পেট্রোলিয়াম এবং প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রামেশ্বর তেলি জানিয়েছেন, ওই ক্ষেত্র থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত হবে ৩-৪ বছরে।
জহরবাবু অশোকনগরের তেলের মান সম্পর্কেও জানতে চেয়েছিলেন। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ওই জ্বালানি দেশের বম্বে হাই কিংবা বিশ্ব বাজারের অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের থেকে উন্নত মানের কি? তা আন্তর্জাতিক মানের হওয়ার যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তার সারবত্তা কতটা? তেলি বলেছেন, ওই ক্ষেত্রে তেল আছে কি না এবং থাকলে তার মান এবং পরিমাণ কত, সেই সংক্রান্ত মূল্যায়ন করার জন্য ওএনজিসি অশোকনগরে প্রথম দফায় দু’টি কূপ খনন করে। তার একটি পরিত্যক্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। অন্য কূপটিতে খনন চালানো হয়েছে এবং তা থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণের কাজ চলছে। এ ছাড়া, অশোকনগর এবং কাঁকনপুলি অঞ্চলে আরও দু’টি কূপ খোঁড়া হয়েছে। সেগুলিতে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজও শেষ। তাঁর দাবি, গবেষণাগারের পরীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে যে, অশোকনগর এবং তার সংলগ্ন এলাকায় পাওয়া তেল হাল্কা ওজনের। মানও অত্যন্ত উন্নত। বম্বে হাই থেকে পাওয়া এবং বিশ্ব বাজারে উন্নত মানের অশোধিত তেল ব্রেন্ট ক্রুডের সমান। আন্তর্জাতিক বাজারে যার ভাল চাহিদা রয়েছে।
তবে তেলি জানিয়েছেন, বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে তেল বা গ্যাস উত্তোলনের জন্য কূপগুলি তৈরি কি না, তা নির্ধারণ করতে আরও নানা পদক্ষেপ করা জরুরি। প্রথমে কূপ খননকালে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণের কাজ শেষ করতে হবে। তার পরে দরকার কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের কিছু অনুমোদন (যেমন, ফিল্ড ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, পেট্রোলিয়াম খননের লাইসেন্স মঞ্জুরি ইত্যাদি)। তেল-গ্যাসের বাণিজ্যিক উত্তোলনের জন্য প্রকল্পের কারিগরি-সহ সংশ্লিষ্ট প্রস্তুতিও সারতে হবে। এই সব কিছুতে সাধারণত ৩-৪ বছর সময় লেগে যায়।