গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
গত বছরের জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার লেনদেন এবং গবেষণাকারী সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ কৃত্রিম ভাবে শেয়ার দর বাড়িয়ে প্রতারণা এবং বেআইনি লেনদেনের অভিযোগ তুলেছিল আদানি গোষ্ঠির সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে। তার পরেই তদন্তে নামে শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। অবশেষে সেই প্রেক্ষিতেই গৌতম আদানির নথিভুক্ত ১০টি সংস্থার মধ্যে সাতটির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর (শো কজ়) নোটিস জারি করল তারা। নথিভুক্ত সংস্থা হিসাবে শেয়ার বাজারের নিয়ম না মানা এবং সম্পর্কিত পক্ষের (রিলেটেড পার্টি) সঙ্গে লেনদেন সংক্রান্ত বিধিভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতেই নোটিস পাঠানো হয়েছে। সংস্থাগুলি তা শেয়ার বাজার কর্তৃপক্ষকে জানিয়েওছে। আর তার হাত ধরেই শুক্রবার ফের চর্চায় ফিরেছে আদানিদের বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের প্রতারণার অভিযোগ।
সেবির নোটিস জারির কথা সামনে আসতেই এ দিন ফের আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে কংগ্রেস। বিরোধী দলটির সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বিবৃতিতে বলেছেন, দীর্ঘ দিন ধরে টালবাহানার পরে এবং সুপ্রিম কোর্টের চাপে সেবি আদানিদের বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হল। অভিযোগ সেই নিয়ম ভাঙারই।
সেবির ওই নোটিস ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আমেরিকার শেয়ার লেনদেন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তেরই অঙ্গ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। যদিও আদানিরা ফের এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাদের দাবি, শো কজ় নোটিস কোনও অভিযোগ নয়। শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক কিছু বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে তাদের কাছে।
আদানিদের যে সব সংস্থাকে সেবি কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠিয়েছে সেগুলির মধ্যে গোষ্ঠীর প্রধান সংস্থা আদানি এন্টারপ্রাইজ়েস, আদানি গ্রিন এনার্জি, আদানি টোটাল গ্যাস লিমিটেড শেয়ার বাজারকে জানিয়েছে যে, সেবি নোটিস পাঠিয়েছে গোষ্ঠীর হোল্ডিং কোম্পানিকে বা মূল সংস্থাকে। পাশাপাশি আদানি পোর্টস অ্যান্ড স্পেশাল ইকনমিক জোন, আদানি পাওয়ার, আদানি এনার্জি সলিউশনস এবং আদানি উইলমার জানিয়েছে যে, তারা সেবির নোটিস পেয়েছে। সেবির ওই নোটিস মূলত সংস্থাগুলির ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরের হিসাব সংক্রান্ত বলে উল্লেখ করে সবকটি সংস্থাই দাবি করে, কোনও আইনই ভঙ্গ করা হয়নি।
তবে আদানি গোষ্ঠী। ওই দাবি করলেও তাঁর বিবৃতিতে জয়রাম রমেশ মনে করিয়ে দেন যে, গৌতম আদানির ওই সব সংস্থার একাধিক সন্দেহজনক লেনদেনের ব্যাপারে অডিটরেরা তাদের বিপোর্টে বিরূপ মন্তব্য (কোয়ালিফায়েড ওপিনিয়নস) করেছিল। আদানি পোর্টসের অডিটর সংস্থা ডেলয়েট হাসকিনস অ্যান্ড সেলস সংস্থার ২০২২-২৩ সালের অডিট রিপোর্টে এমন একাধিক লেনদেনের দিকে আঙুল তোলে।