বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সালিশি কমিটিতে সদস্য নিয়োগ, ই-কমার্স এবং ডব্লিউটিও-র সংস্কার— এই ধরনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সোমবার থেকে দিল্লিতে দু’দিনের বৈঠকে বসতে চলেছে ২২টি দেশ। ছ’টি অপেক্ষাকৃত কম উন্নত ও ১৬টি উন্নয়নশীল দেশ মন্ত্রী পর্যায়ের এই বৈঠকে যোগ দিচ্ছে। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, আমেরিকা ও চিনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ, ব্রেক্সিট সংক্রান্ত বিতর্কের আবহে ডব্লিউটিও-র সালিশি ক্ষমতা সঙ্কটে পড়ছে। এই অবস্থায় ঐক্যমতের ভিত্তিতে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে চাইছে উন্নয়নশীল দেশগুলি। সেই প্রেক্ষিতেই এ বারের বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ।
দেশে এখন সাধারণ নির্বাচনের ভরা মরসুম। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন কেন? বাণিজ্য সচিব অনুপ ওয়াধওয়ন জানাচ্ছেন, সামনেই একের পর এক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংক্রান্ত বৈঠক রয়েছে। যেমন, জুনের শেষে জাপানে বৈঠকে বসবে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি। তার আগে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে সহমত তৈরি হওয়া জরুরি। ভারত ছাড়াও চিন, ব্রাজিল, সৌদি আরব, বাংলাদেশের মতো দেশগুলি যোগ দেবে বৈঠকে।
ডব্লিউটিও-র সালিশি কমিটিতে সদস্য নিয়োগ অনেক দিন ধরে আটকে রেখেছে আমেরিকা। কিন্তু আগামী ১০ ডিসেম্বর বেশ কয়েক জন সদস্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগে সদস্য নির্বাচন করা না গেলে কমিটি কার্যত অকেজো হয়ে পড়বে। সে ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে চাইছে উন্নয়নশীল দেশগুলি। তা ছাড়া আমেরিকার আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির মতো কিছু এক তরফা সিদ্ধান্ত নিয়েও তারা উদ্বিগ্ন। বৈঠকের পরে এই সমস্ত বিষয়ে যৌথ বিবৃতি জারি করা হতে পারে।
ভারতের খাদ্যে ভর্তুকি নিয়ে অনেক দিন আগে থেকেই আপত্তি রয়েছে আমেরিকার। উন্নয়নশীল দেশ খাদ্যে যে ভর্তুকি দেয়, তাকে কৃষি ভর্তুকি বলে দাবি করে আমেরিকা। এই নিয়ে বিতর্কে একাধিক বার ভেস্তে গিয়েছে ডব্লিউটিও-র বৈঠক। উন্নয়নশীল দেশগুলিকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়েও ওয়াশিংটনের আপত্তি রয়েছে। এই সব বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পোক্ত করতেও আলোচনা করতে পারে উন্নয়নশীল দেশগুলি।