শিয়ালদহ স্টেশন। —ফাইল চিত্র।
দেশভাগের আগে, শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট, কুষ্টিয়া হয়ে দার্জিলিং মেল ছুটত। ওই পথ ধরেই খুলনা, গোয়ালন্দ হয়ে বরিশাল বা অসমের পৌঁছনো যেত। ১৬২ বছর আগে ওই রেলপথের হাত ধরেই শিয়ালদহ স্টেশনের আত্মপ্রকাশ। ১৮৬২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট পর্যন্ত বাষ্প ইঞ্জিন ব্যবহার করে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলের ট্রেন ছুটেছিল। দিনটির স্মরণে রবিবার বিশেষ পুস্তিকা এবং স্মারক টিকিট প্রকাশিত হল। শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট, একটি বিশেষ ট্রেনও চালানো হয়। পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জিএম সুমিত সরকার, শিয়ালদহের ডিআরএম ছাড়াও রেল এনথুসিয়াস্ট সোসাইটির পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান প্রাক্তন রেল কর্তা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে ছিলেন।
ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের হাত ধরে হাওড়া স্টেশন আগেই চালু হয়েছিল। ১৮৫৭ সালে তৈরি হয় কলকাতা, সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ে। বছর খানেকের মধ্যে তা ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলের অন্তর্ভুক্ত হয়। ওই রেলের কেন্দ্র হিসেবেই শিয়ালদহ স্টেশন তৈরির সূচনা। ওয়াল্টার গ্র্যান ভিলের নকশা, পরিকল্পনায় ১৮৬৯-এ স্টেশনটি সম্পূর্ণ হয়। তার আগেই অবশ্য রানাঘাট পর্যন্ত রেলপথ প্রস্তুত।
স্বাধীনতার আগে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার সব ট্রেনই পূর্ববঙ্গের ভিতর দিয়ে যাতায়াত করত। ১৮৭৮-এ চালু হয় দার্জিলিং মেল। যাত্রীরা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ১৮৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মার দামুকদিয়াহ ঘাট পর্যন্ত যেতেন। ফেরিতে নদী পেরিয়ে ও-পারে মিটারগেজ ট্রেনে ৩৬৩ কিলোমিটার পার হয়ে শিলিগুড়ি পৌঁছতেন। ১৯১২ সালে পদ্মার উপরে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ তৈরি হলে কলকাতা ও উত্তরবঙ্গের সরাসরি যোগাযোগের ব্যবস্থা হয়। এ পার বাংলায় পাট শিল্পের বিকাশেও ওই রেলপথের ভূমিকা ছিল।