২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৬৪% জিএসটি মিটিয়েছেন নীচের তলার ৫০% মানুষ! প্রতীকী ছবি।
ধনীতম ১% মানুষের হাতে ৪০% সম্পত্তি। নীচের তলার অর্ধেকের হাতে ৩%!
অতিমারি হানার সময় থেকে প্রতি দিন ধনকুবেরদের সম্পত্তি বাড়ছে ৩৬০৮ কোটি টাকা করে। অথচ ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ৬৪% জিএসটি মিটিয়েছেন নীচের তলার ৫০% মানুষ!
এই সমস্ত ছবিই ভারতের। বিশ্ব পরিস্থিতি অবশ্য আলাদা কিছু নয়!
অতিমারি যে বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ স্বাস্থ্য সঙ্কট ডেকে এনেছে, তা মেনেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার খাদে পড়ায় জীবিকা গিয়েছিল অনেকের। আবার ঠিক সেই সময়ে ধনী-দরিদ্রের সম্পদের ফারাক আরও চওড়া হয়। সোমবার সুইৎজ়ারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামের বার্ষিক বৈঠক শুরু হয়েছে। সেখানেই ‘সারভাইভাল অব দ্য রিচেস্ট’ শীর্ষক রিপোর্ট পেশ করে এই ধরনের বহু তথ্য তুলে ধরেছে অক্সফ্যাম ইন্টারন্যাশনাল। যা নিয়ে প্রত্যাশিত ভাবেই আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধীরা।
রিপোর্টে দাবি, অতিমারি শুরুর পর থেকে ভারতের ধনকুবেরদের (১০০ কোটি ডলার বা প্রায় ৮২০০ কোটি টাকার মালিক) সম্পত্তি ১২১% বেড়েছে। ধনীতম ১০ ব্যক্তির উপরে ৫% অতিরিক্ত কর চাপানো হলে শিক্ষার আঙিনায় ফেরানো যাবে স্কুলছুট সমস্ত পড়ুয়াকে। ধনকুবেরদের সমস্ত সম্পদের উপরে ২% কর চাপানো হলে সরকারের রাজকোষে আসতে পারে ৪০,৪২৩ কোটি টাকা। যা দিয়ে দেশের অপুষ্ট সমস্ত মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করা যাবে ১৮ মাস। ২০১৭-২০২১ সালে শিল্পপতি গৌতম আদানির শুধু শেয়ার সম্পদই যা বেড়েছে, তাতে এককালীন কর চাপালে আসতে পারে ১.৭৯ লক্ষ কোটি। তা কাজে লাগিয়ে ৫০ লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করা যায়। মহিলা, দলিত, জনজাতিভুক্ত মানুষেরা মজুরির ক্ষেত্রে কী ভাবে সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তা-ও বলা হয়েছে রিপোর্টে। অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার সিইও অমিতাভ বেহরার কথায়, ‘‘দলিত, জনজাতি, মুসলিম, মহিলা ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা ক্রমাগত কোণঠাসা হচ্ছেন। অথচ এই ব্যবস্থাই ধনীদের সুবিধা করে দিচ্ছে।’’
অক্সফ্যামের রিপোর্ট নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করে বিরোধী কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীর টুইট, ‘‘সবচেয়ে দরিদ্র ৫০% মানুষের জিএসটিতে অবদান ৬৪%। ধনীতম ১০ শতাংশের ৩%। গব্বর সিংহ ট্যাক্স। ধনীকে ছাড়, দরিদ্রের উপরে লুটপাট।’’