চিকিৎসক সেবন্তী গোস্বামী
প্রসব অথবা মেনোপজের পরে অনেক মহিলাই স্ট্রেস ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স (এসইউআই) রোগে আক্রান্ত হন। এই ধরনের সমস্যায় হাঁচি, কাশি, জোরে হেসে ওঠা, কিংবা লাফিয়ে ওঠার সময়ে তলপেটে চাপ বাড়তে থাকে। এমন কোনও অবস্থায় সংশ্লিষ্ট রোগী তাঁদের অজান্তেই প্রস্রাব করে ফেলেন। বেশ কিছুটা সময়ের পরে এই বিষয়টি তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। মহিলাদের ক্ষেত্রে মূলত মেনোপোজের পরে হরমোনের অভাবে যে শিথিলতা তৈরি হয়, সেই শিথিলতাই এই সমস্যার জন্য দায়ী। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মূত্রনালীর পেশির ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়াই এর মূল কারণ।
এই অবস্থা নিঃসন্দেহে মহিলাদের যে কোনও পরিস্থতিতেই অত্যন্ত বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়। এবং সেই সঙ্গে তাঁদের দৈনন্দিন কর্মজীবনকেও ব্যহত করে। এমনকি কিছু সময় তাঁদের সামাজিক জীবনও এতে প্রভাবিত হয়। অনেকেই বাইরে যাওয়া বা বেড়াতে যাওয়া প্রায় ছেড়েই দেন। বিশেষ করে মহিলারা কর্মক্ষেত্রে এই অবস্থার সম্মুখীন হলে খুবই লজ্জাজনক অবস্থার মধ্যে পড়ে যান। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেকে নিয়মিত স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ডায়পার ব্যবহার করা শুরু করেন। সব মিলিয়ে এই এসইউআই মহিলাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে বেশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অপ্রস্তুত হওয়ার ভয়ে দিনের পর দিন তাঁরা এটি গোপন করেন এবং ধীরে ধীরে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
আগে এসইউআই-এর চিকিৎসা মূলত অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমেই হত। কিন্তু আশার কথা এই যে, এই সমস্যা প্রাথমিক বা মাঝারি পর্যায়ে থাকলে অস্ত্রোপ্রচার ছাড়াও লেজার চিকিৎসার মাধ্যমে নিরাময় করা সম্ভব। লেজারের ব্যবহার আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বেশ কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। সেই লেজার ব্যবহারেই এই এসইউআই-এর সমাধান করা এখন বেশ সহজ হয়ে গেছে। লেজার প্রয়োগ করে কোষগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়, এতে টিস্যুর শিথিলতা কমে। একই সঙ্গে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা বাড়ে। নতুন কোলাজেন টিস্যু তৈরি হওয়ার ফলে অ্যাক্ট্রোফির চিকিৎসাও হয়।
এই লেজার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কোনও প্রয়োজন হয় না। এই চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ বহির্বিভাগ ভিত্তিক। প্রতিটি সিটিংয়ের সময়সীমা মাত্র আধ ঘন্টা। চার সপ্তাহের ব্যবধানে মাত্র তিনটি সিটিং করাতে হয়। লেজারের মাধ্যমে করা এই চিকিৎসা সম্পূর্ণ যন্ত্রণাহীন। এতে কোনও অস্ত্রোপ্রচারের প্রয়োজন নেই। তাই কোনও কাটা ছেঁড়া সেলাইয়ের প্রশ্নই ওঠে না। এটা পুরোপুরি যন্ত্রণাহীন তাই বেদনানাশক বা অ্যানাস্থেশিয়ারও প্রয়োজন পড়ে না। এই চিকিৎসা পদ্ধতির আরও একটি সুবিধাজনক দিক হল এই চিকিৎসার পরে মহিলাদের কোনও বিশ্রামের দরকার নেই। চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ হলেই মহিলারা স্বাভাবিক ভাবে তখনই দৈনন্দিন জীবনে ফিরতে পারেন।
ঠিকানা: এ এম মেডিক্যাল সেন্টার প্রাইভেট লিমিটেড, ৯৭এ, সাউদার্ন অ্যাভেনিউ, কলকাতা: ২৯
ফোন নম্বর: 9230060283
ইমেল আইডি: Info@ammedicalcentre.In
এই প্রতিবেদনটি ‘এ.এম. মেডিক্যাল’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।