মেধাস্বত্ব অধিকার বা ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস নিয়ে কর্মশালা হল টেকনো ইন্টারন্যাশনাল নিউ টাউনে। আজকের উদ্ভাবন সর্বস্ব পৃথিবীতে দাঁড়িয়ে এই মেধাস্বত্ব অধিকার বা ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস (IPR)-এর গুরুত্ব অপরিসীম। গত ২৫ অগস্ট TINT ক্যাম্পাসে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। TINT-র আইপিআর সেল (IPR Cell)-এর উদ্বোধনও হয়ে গেল এই কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে, যা এই প্রতিষ্ঠানের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলকও বটে।
ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস-এর হিসেবনিকেশ বেশ জটিল। অংশগ্রহণকারীদের কাছে সেই জটিল দুনিয়ার সার্বিক ছবি তুলে ধরেছে এই কর্মশালা। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে রোজই কোনও না কোনও উদ্ভাবন ঘটছে। সেই জায়গা থেকে IPR বিষয়টা বোঝা খুবই জরুরি হয়ে উঠেছে। কোনও প্রতিষ্ঠান কিংবা এক জন আবিষ্কর্তার কাছে পেটেন্ট, লাইসেন্স, ট্রেডমার্ক এবং কপিরাইটের তাৎপর্য কী, এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা তার সম্পর্কে একটা সামগ্রিক ধারণা পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানের একটি অংশে ছিল মডেল প্রদর্শনী, যেখানে একগুচ্ছ উদ্ভাবনী প্রকল্প এবং ভাবনা তুলে ধরা হয়। উদ্ভাবনকুশলতার উদ্যাপনের পাশাপাশি ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটস-এর যথাযথ ব্যবস্থাপনায় ঠিক কী ফলাফল হতে পারে, তা-ও সুস্পষ্ট ভাবে দেখানো হয়। তাক লাগানো উদ্ভাবন থেকে দূরদর্শী ভাবনা-সহ মডেল প্রদর্শনী হয়ে উঠেছিল বেশ মনোগ্রাহী ও অনুপ্রেরণাময়।
কর্মশালায় সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরা তাঁদের মূল্যবান অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন ডাঃ মহুয়া হোমচৌধুরী। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পর্ষদের সিনিয়র সায়েনটিস্ট এবং নোডাল অফিসার। পেটেন্ট নথিভুক্ত করার পদ্ধতি এবং এক জন উদ্ভাবকের কাছে পেটেন্টের গুরুত্ব কতটা-- সেই বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে আর এক বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন ডাঃ সিদ্ধার্থ দাস, যিনি বর্তমানে খড়্গপুর আইআইটি-র মেটালার্জিক্যাল এবং মেটিরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক এবং ওই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অন্ত্রোপ্রনর্স পার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর। আইআইটি-র প্রিজম স্কিমে সবার আগে প্রোজেক্ট জমা দেওয়া এবং DST, GOI-এর থেকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রকল্পে অনুদান পাওয়ার জন্য তিনি TINT-র প্রশংসা করেন। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পর্ষদের পেটেন্ট ইনফর্মেশন সেন্টারের বিজ্ঞানী পারমিতা সাহা এবং সঙ্গীতা সেনগুপ্তও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় এই বিশিষ্ট জনেরা তাঁদের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের ঝুলি উপুর করে দেন। ইন্টালেকচুয়াল প্রপার্টি রাইটসের বাস্তব প্রয়োগ নিয়েও কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তাঁরা।
সব মিলিয়ে এই কর্মসূচি সম ভাবনার ব্যক্তিদের একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন এবং শিল্পক্ষেত্রের অভিজ্ঞ মানুষদের থেকে কিছু শিখে নেওয়ার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিল, যাতে অংশগ্রহণকারীরা প্রতিযোগিতার এই যুগে এক কদম এগিয়ে থাকে। কলেজের ডিরেক্টর, অধ্যাপক আর টি গোস্বামী বলেন, “টেকনো ইন্টারন্যাশনাল নিউ টাউন উদ্ভাবন এবং সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দেওয়ার প্রতি দায়বদ্ধ। IPR সেল-এর উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে জ্ঞান আদান-প্রদান, দক্ষতায় শান দেওয়া এবং ইন্ডাস্ট্রিগত সহযোগিতার একটা মঞ্চ তৈরি হল। এই বিভাগ আগামী দিনে এই কলেজের শিক্ষকমণ্ডলী, ছাত্রছাত্রী এবং গবেষকদের মধ্যে পেটেন্ট সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াবে এবং পেটেন্ট নথিভুক্ত করার বিষয়টাকেও ত্বরান্বিত করবে।”