রিস্কোমিটার
বিনিয়োগ-মাধ্যম হিসেবে মিউচুয়াল ফান্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা যাতে বুঝেশুনে বিনিয়োগ করেন, তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (SEBI) বেশ কিছু উপায় বার করেছে, যার মধ্যে ‘রিস্কোমিটার’ অন্যতম। এর সাহায্যে খুব সহজেই একটি ফান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঝুঁকির মূল্যায়ন করা যায়। এর ধরন অনেকটা গাড়ির স্পিডোমিটারের মতো, যেখানে কম থেকে বেশির পরিমাপে ঝুঁকির মাত্রা বোঝা যায়। রিস্কোমিটার দেখে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে আপনার পছন্দের ফান্ড আদৌ আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার সঙ্গে মানানসই কি না। কী ভাবে তা বোঝা যাবে দেখে নেওয়া যাক:
কম ঝুঁকি (Low risk): ‘লো রিস্ক’ তকমার কোনও ফান্ডে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারী আশা করতে পারেন, বিনিয়োগে খুব কমই ঝুঁকি আছে। এই শ্রেণির ফান্ড সেই সব বিনিয়োগকারীর জন্য আদর্শ, যাঁরা ন্যূনতম ঝুঁকি নিতে চান।
কম থেকে মাঝারি ঝুঁকি (Low to moderate risk): যাঁরা ‘লো টু মডারেট রিস্ক’ শ্রেণিভুক্ত ফান্ডে বিনিয়োগ করেন, তাঁরা আশা করতে পারেন, বিনিয়োগ নিয়ে ঝুঁকির পরিমাণ বেশ কম। রক্ষণশীল বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি আদর্শ।
মাঝারি ঝুঁকি (Moderate Risk): ‘মডারেট রিস্ক’ শ্রেণিভুক্ত ফান্ড আংশিক রক্ষণশীল বিনিয়োগকারীদের জন্য আদর্শ। এই ফান্ড তাঁদের জন্য, যাঁরা সীমিত পরিমাণে ঝুঁকি নিয়ে সম্পদ গড়তে চান।
মাঝারি থেকে বেশি ঝুঁকি (Moderately high risk): এই শ্রেণিভুক্ত ফান্ডগুলোতে শেয়ার বাজারের ঝুঁকির প্রভাব রয়েছে। আগ্রাসী বিনিয়োগকারী, যাঁরা মাঝারি থেকে দীর্ঘমেয়াদি (৩ বছর+) বিনিয়োগ করতে চান, এই ফান্ড তাঁদের জন্য আদর্শ।
বেশি ঝুঁকি (High risk): আগ্রাসী বিনিয়োগকারী, যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি (৫ বছর+) বিনিয়োগ করতে চান, এই ধরনের ফান্ড তাঁদের জন্য আদর্শ। এই ফান্ডে বিনিয়োগ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং এর উপরে শেয়ার বাজারের অস্থিরতার প্রভাবও পড়তে পারে।
খুব বেশি ঝুঁকি (Very High Risk): অন্যান্য ফান্ডের তুলনায় এতে খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারে বিনিয়োগ করা হয়। এটা প্রচণ্ড আগ্রাসী বিনিয়োগকারীদের জন্য আদর্শ। দীর্ঘমেয়াদি সম্পদ তৈরির লক্ষ্যে এই ফান্ড। এতে বিনিয়োগ করা মূলধন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে, মিউচুয়াল ফান্ডের দুনিয়ায় যা সর্বোচ্চ। সেক্টোরাল/ থিম্যাটিক/ আন্তর্জাতিক/ মিডক্যাপ/ স্মলক্যাপ ফান্ডগুলি এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
ইদানীং অনেক ভেবেচিন্তে এবং পর্যালোচনা করে বিনিয়োগ করার সুযোগ বেড়েছে। শেয়ার বাজার অস্থির থাকলে রিস্কোমিটার বুঝতে পারাটা খুব জরুরি। সংশোধিত রিস্কোমিটার আগেকার রিস্কোমিটারের মতো নয়। এ ক্ষেত্রে একটি ফান্ডে থাকা হোল্ডিং-এর উপরে ভিত্তি করে ঝুঁকি পরিমাপ বা ‘রিস্ক গ্রেডিং’ করা হয়। মিউচুয়াল ফান্ডের জগৎ মহাসমুদ্রের মতো। চার পাশে অসংখ্য মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। রিস্কোমিটার দেখে এক জন বিনিয়োগকারী সহজে তার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার সঙ্গে মানানসই ফান্ড বেছে নিতে পারেন। ঝুঁকির মান অনুযায়ী কী ভাবে বিভিন্ন ফান্ডের শ্রেণি বিন্যাস করতে হবে, তা অ্যাসোসিয়েশন অব মিউচুয়াল ফান্ড (AMFI)-এর নির্দেশিকায় স্পষ্ট ভাবে বলে আছে। গাড়ির স্পিডোমিটারের মতো দেখতে এই রিস্কোমিটার সংশ্লিষ্ট স্কিমের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঝুঁকির মাত্রা সুন্দর ভাবে দেখিয়ে দেয়। এর সাহায্যে এক জন বিনিয়োগকারী একটি ফান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঝুঁকির পরিমাণ সহজে বুঝতে পারেন।
রিস্ক প্রোফাইলার ব্যবহার করে এক জন বিনিয়োগকারী কী ভাবে তাঁর ব্যক্তিগত ঝুঁকির মূল্যায়ন করবেন?
বিনিয়োগের জনপ্রিয় উপায় হওয়ার পাশাপাশি মিউচুয়াল ফান্ডের সঙ্গে কিছু ঝুঁকিও জড়িয়ে থাকে। রিস্ক প্রোফাইলার দিয়ে এক জন বিনিয়োগকারী তাঁর ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার মূল্যায়ন করতে পারেন। কোনও বিনিয়োগকারীর কতটা ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা আছে, রিস্ক প্রোফাইলার তার একটা আন্দাজ দেয়। ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতার বাইরে গিয়ে বিনিয়োগ ইনভেস্টমেন্ট পোর্টফোলিওর জন্য খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। মিউচুয়াল ফান্ড পোর্টফোলিওর বিন্যাস কী হবে, তা নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে সেই ব্যক্তির ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা বা ‘রিস্ক অ্যাপেটাইট’-এর উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে। রিস্ক প্রোফাইলার বলে দেয় যে এক জন ব্যক্তি কতটা ঝুঁকি নিতে তৈরি। বিনিয়োগ করার আগে আপনার রিস্ক প্রোফাইল আপডেট করে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। এতে আপনার সুবিধে তো হবেই, পাশাপাশি আপনার রিস্ক প্রোফাইলের সঙ্গে মানানসই বিনিয়োগের পথ বা ‘ইনভেস্টমেন্ট অ্যাসেট’ বেছে নিয়ে পোর্টফোলিও তৈরির কাজটা আপনার বিনিয়োগ পরামর্শদাতার কাছেও সহজ হয়ে যাবে। রিস্ক প্রোফাইল সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীর ক্ষেত্রে আশঙ্কার জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। রিস্ক প্রোফাইল জানা থাকলে তা ক্ষতি এড়াতে বা ক্ষতির পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
কোনও বিনিয়োগকারী যখন কোনও একটি মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করছেন, তখন রিস্কোমিটার সেই স্কিমের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঝুঁকির মাত্রা পরিমাপ করতে সাহায্য করে। তবে এটা জেনে রাখা দরকার যে, রিস্কোমিটার শুধু আপনাকে সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নিতেই সাহায্য করবে না, আপনার ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা অনুযায়ী একটা ফান্ড ক্যাটেগরি বেছে নেওয়ার রাস্তায় এটি প্রথম পদক্ষেপ। এক জন বিনিয়োগকারীর উচিত সংশ্লিষ্ট ফান্ডের ‘রিস্ক’-এর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা মিলিয়ে দেখা। তাঁর বিনিয়োগ কোন শ্রেণির অন্তর্গত, তা বুঝে নিয়ে, তার পরেই ভবিষ্যতের জন্য দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করা ভাল।
বিনিয়োগকারীদের শিক্ষা এবং সচেতনতার জন্য এটি অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ডের একটি উদ্যোগ। বিনিয়োগকারীদের একটি এককালীন (ওয়ান টাইম) KYC করাতে হবে।
আরও জানতে দেখুন www.axismf.com, অথবা customerservice@axismf.com-এ যোগাযোগ করুন। বিনিয়োগকারীদের শুধুমাত্র নিবন্ধিত মিউচুয়াল ফান্ড-ই বেছে নেওয়া উচিত। www.sebi.gov.in-এ Intermediaries/ Market Infrastructure Institutions-এর পাতায় গিয়ে এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারেন। কোনও রকমের অভিযোগ জানাতে বিনিয়োগকারীরা 1800 221 322 নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা SEBI Scores পোর্টাল – http://scores.gov.in-এ গিয়ে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারেন।
এখানে দেওয়া তথ্য বা মতামত নির্ভুল, পূর্ণাঙ্গ এবং স্বচ্ছ কি না তার সপক্ষে কোনও বিবৃতি বা ওয়ার্যান্টি দেওয়া হচ্ছে না। প্রয়োজন মতো বিভিন্ন সময়ে এই বিবৃতি বদল করার স্বত্ব এই অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি (AMC) দ্বারা সংরক্ষিত।
বিধিবদ্ধ খুঁটিনাটি: অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক লিমিটেডের উদ্যোগে (লায়াবলিটি ১ লক্ষ টাকায় সীমাবদ্ধ) ইন্ডিয়ান ট্রাস্টস অ্যাক্ট ১৮৮২ মেনে অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ড গঠন হয়েছে। ট্রাস্টি: অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ড ট্রাস্টি লিমিটেড। ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজার: অ্যাক্সিস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (AMC)। রিস্ক ফ্যাক্টর: স্কিম চালনার কারণে কোনও ক্ষতি অথবা প্রত্যাশার থেকে খারাপ ফল হলে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক লিমিটেড তার জন্য দায়ী থাকবে না।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। স্কিম সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ভাল করে পড়ে নিন।
এই প্রতিবেদনটি ‘অ্যাক্সিস মিউচুয়াল ফান্ড’-এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।