ইতিমধ্যেই পুলিশি ঘেরাটোপে শোলাকিয়া ইদগাহ ময়দান। ছবি সৌজন্য: বাংলা ট্রিবিউন।
মাত্র আড়াই মাস আগেই হানা দিয়েছিল সেই রক্তাক্ত দিন। খুশির ইদে সবচেয়ে বড় নমাজের জমায়েত লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। শোলাকিয়ার সুবিশাল ইদগাহ ময়দানে না ঢুকেই ঢাকা ফিরে যেতে হয়েছিল মৌলানা ফরিদউদ্দিন মাসুদকে। আবার দরজায় কড়া নেড়েছে উৎসব। রাত পোহালেই কুরবানির ইদ। এ বারের নমাজে যাতে আর কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা গোটা বাংলাদেশে। শোলাকিয়া ইদগাহ ময়দান ঘিরে দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে প্রশাসন। ঢাকায় জাতীয় ইদগাহ ময়দান ঘিরেও সুরক্ষা বলয় প্রস্তুত।
ধানমণ্ডি ইদগাহ, ঢাকা।
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় যে ইদের জমায়েত হয়, তা বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ইদের জমায়েত। প্রায় চার লক্ষ মানুষ শোলাকিয়া ইদগাহ ময়দানে প্রতি বছর ইদের নমাজ পড়তে সমবেত হন। ইদুল-ফিতরের সময় যে পরিমাণ জমায়েত হয়, কুরবানির ইদে জমায়েতের আকার তার চেয়ে একটু কম হয় ঠিকই। কিন্তু সে জমায়েতও লাখ তিনেকের কাছাকাছি বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। এ বছর ইদুল-ফিতরের দিন নামাজ শুরু সামান্য আগেই ইদগাহ চত্বরে হামলার চেষ্টা হয়। ইদগাহের পাশে আজিমুদ্দিন স্কুলের সামনে পুলিশ চৌকিতে হামলা হয়। জঙ্গিদের গ্রেনেডের আঘাতে এবং চাপাতির কোপে দুই পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। দু’পক্ষের গুলি বিনিময় চলাকালীন এক গৃহবধূ নিজের ঘরেই গুলিবিদ্ধ হন। হামলাকারী জঙ্গিদের এক জনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। অপর জঙ্গি পরে নিহত হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। ঘটনার অভিঘাত কিন্তু এখনও ভুলতে পারেনি শোলাকিয়া বা কিশোরগঞ্জ। ইদুল-আজহার দিনেও নমাজের জমায়েতে হামলার চেষ্টা হতে পারে। জঙ্গিরা যে ভাবে বাংলাদেশকে অশান্ত এবং সন্ত্রস্ত করতে চাইছে, তাতে শুধু শোলাকিয়া নয়, দেশের যে কোনও প্রান্তেই হামলার চেষ্টা হতে পারে বলে গোয়েন্দাদের আশঙ্কা। তাই কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে দেশজুড়ে। তবে শোলাকিয়া এবং ঢাকার জাতীয় ইদগাহ ময়দানের নিরাপত্তায় বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
শোলাকিয়া ইদগাহ ময়দান। কিশোরগঞ্জ। ছবি সৌজন্য: বাংলা ট্রিবিউন।
শোলাকিয়া মাঠ এবং আশপাশের এলাকায় তিন প্লেটুন বিজিবি মোতায়েন থাকছে। এ ছাড়া মাঠের নিরাপত্তায় মোতায়েন হচ্ছে র্যাব এবং পুলিশ।
ঢাকায় জাতীয় ইদগাহ ময়দান ঘিরে চারটি নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ তো থাকছেই। থাকছে কম্যান্ডো ইউনিটও। মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার সাহাবুদ্দিন কুরেশি এ কথা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইদের টানা ছুটিতে চেনা ঢাকা এখন অচেনা
জাতীয় ইদগাহ ময়দান এবং শোলাকিয়া ইদগাহ ময়দানে ব্যাগ, পোঁটলা বা অন্য কোনও জিনিসপত্র নিয়ে বুধবার কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। নমাজ পড়ার জন্য ব্যবহৃত আসন (জায়নামাজ) ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে ইদগাহ ময়দানে ঢোকা যাবে না। যাঁরা নমাজ পড়তে আসবেন, তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে জাতীয় ইদগাহ ময়দানে আর্চওয়ে বসানো হচ্ছে। প্রত্যেককে পরীক্ষা করে ময়দানে ঢোকানোর জন্য থাকছে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর। সিসিটিভি এবং ডগ স্কোয়াডও প্রস্তুত।