মাহদি ওরফে পলাশ ওরফে মাহিবি। নিজস্ব চিত্র
রবিবার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে দুবাই যাওয়ার বিমানে ওঠার আগে ফেসবুকে তার শেষ পোস্ট ছিল— ‘ঘৃণা নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে।’ পুলিশ জানিয়েছে, যে পিস্তল দিয়ে বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা হয়েছিল, সেটি নেহাতই খেলনা পিস্তল। কম্যান্ডোদের গুলিতে নিহত এই ছিনতাইকারীর যে পরিচয় পুলিশ দিয়েছে, তাতে তার নাম মহম্মদ পলাশ আহমেদ। সিট নম্বর ছিল ১৭বি।
কিন্তু পুলিশ পরিচয় জানানোর আগেই পলাশের বাবা পিয়ার জাহান সর্দার সংবাদ মাধ্যমের সামনে ছেলের জন্য ক্ষমা চেয়ে জানান, তাঁদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দুধঘাটা গ্রামে। পলাশ সোনারগাঁয়ের তাহেরপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে সোনারগাঁ ডিগ্রি কলেজে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়ে আর পড়াশোনা করেনি। সে প্রায়ই বিদেশে যেত। তার বাবার কথায়, ‘‘পলাশ অবাধ্য সন্তান। তার দেহ নেব না।’’
বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মিথ্যা নাম ও পরিচয় দিয়ে সুন্দরী ও বিত্তবান পরিবারের মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি ছিল পলাশের নেশা। পলাশ ছাড়া মাহদি নামেও নিজের পরিচয় দিত। আবার মাহিবি জাহান নাম নিয়ে একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট সে চালাত, যাতে নিজের শেষ পোস্টটি সে করে। তাতে নিজেকে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের আইটি বিজনেস অ্যানালিস্ট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নিয়ে পাশ করা বলে দাবি করেছে পলাশ। এর আগে একটি মেয়েকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার একটি মামলায় তাকে ২০ দিন হাজতবাস করতে হয়েছে। এ ছাড়া আরও একটি বিয়েও সে কয়েক বছর আগে করেছিল। কিন্তু সেটা টেঁকেনি।
আরও পড়ুন: প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে ঘাটতি নয়, পুলিশকে বার্তা মমতার
সেনা জানিয়েছে, বিমান ছিনতাইয়ের পরে পলাশ স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চায়। এই ‘স্ত্রী’ বাংলাদেশের এক জনপ্রিয় অভিনেত্রী। কিন্তু তার পরে ওই নায়িকা পলাশের সঙ্গে আর যোগাযোগ রাখতেন না বলে অভিনয় জগতের খোঁজখবর রাখা লোকেরা জানিয়েছেন। তবে পলাশ তাঁর প্রেমে মুগ্ধ ছিল। ঠিক এক মাস আগে ওই নায়িকার সঙ্গে নিজের নানা রোমান্টিক ছবির কোলাজ করা একটি ভিডিয়ো ফেসবুকে পোস্ট করেছিল সে। সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখে নায়িকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি পোস্ট করে পলাশ জানিয়েছিল, ওই দিন তাদের প্রথম বিবাহবার্ষিকী।।