বাবা-মায়ের হাত ধরে ঢাকার রাস্তায়। —নিজস্ব চিত্র।
নেত্রী খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পরে ঘোষণা করেও আন্দোলন জমাতে পারেনি বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি। তারাই বৃহস্পতিবার স্কুলছাত্রদের আন্দোলনকে সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে। বিএনপি-র আশা, এই আন্দোলনই সরকার ফেলে দিতে পারে।
তবে পাঁচ দিনে পা দেওয়া ছাত্রবিক্ষোভ সুষ্ঠু ভাবে মিটিয়ে ফেলতে তৎপর হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। তাদের ন’দফা দাবি নীতিগত ভাবে মেনে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। সংসদে নতুন ট্রাফিক-বিধি আনা ও বেপরোয়া যান নিয়ন্ত্রণে কঠোর শাস্তির বিধান প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মন্ত্রীরা। সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে ‘স্পিড ব্রেকার’ তৈরি এবং যান নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। রবিবার তিনটি বাসের রেষারেষিতে যে দুই ছাত্র-ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, তাদের পরিবারকে ২০ লক্ষ টাকা করে সাহায্য দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন হাসিনা। যে পরিবহণ সংস্থার বাস এই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে, তার মালিককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
রবিবার ওই দুর্ঘটনার পরেই স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা রাস্তায় নেমে বাস ভাঙচুর ও যান নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে। সরকার ও পুলিশের গাড়িও নিয়ম ভেঙে পার পায়নি। শুক্রবার বণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমদের গাড়ি বিধি ভেঙে ‘ওয়ান ওয়ে’-র উল্টো পথে ঢোকায় আটক করে ছাত্ররা। চালকের বৈধ লাইসেন্স না-থাকায় বহু গাড়ি রাস্তাতেই দাঁড় করিয়ে চাবি কেড়ে নেওয়া হয়। যানজট বেধে যায়। সরকার ছাত্রদের রাস্তা ছাড়তে বললেও কাজ হয়নি। এ দিন দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও বৃষ্টির মধ্যেই ছাত্ররা বিক্ষোভ ও যান নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে গিয়েছে। কিছু অভিভাবককে দেখা গিয়েছে বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার ও জল এনে ছাত্রদের মধ্যে বিলি করছেন।
এর মধ্যেই ঢাকার মিরপুরে ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের একদফা সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশের অভিযোগ, কিছু ছাত্র তাদের দিকে ইট-পাথর ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালিয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের সঙ্গে সরকার সমর্থক কিছু যুবককেও ছাত্রদের ওপর চড়াও হতে দেখা গিয়েছে। তবে বিপদ দেখে সরকারি দলের সংগঠন ছাত্র লিগ কালই এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে রেখেছে।