ভারতের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা চুক্তির আগেই বিরোধিতা করেছিল বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি। জামাতে ইসলামির শরিক খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন এই দলটি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে এই চুক্তিটি হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে। নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ। রবিবার তারা দাবি করেছে, বাংলাদেশ জুড়ে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান আসলে সামরিক বোঝাপড়া চুক্তির পক্ষে যুক্তি সাজানোর কৌশল মাত্র। নজর সরানোরও চেষ্টা।
বিএনপি-র এই দাবির পরে শাসক আওয়ামি লিগের এক নেতার জবাব— প্রধানমন্ত্রী হাসিনার ভারত সফরে পাকিস্তানপন্থীরা যে শঙ্কিত, আরও এক বার তা প্রমাণ হল। একই সঙ্গে জঙ্গিদের প্রতি তাদের প্রচ্ছন্ন সমর্থনও প্রকাশ্যে চলে এসেছে।
সিলেটের পরে মৌলভিবাজারের দু’টি জঙ্গি ডেরায় অভিয়ান চালিয়ে অন্তত ১০ জঙ্গিকে নিকেশ করেছে বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গি-দমন শাখা। বিএনপি-র সিনিয়ার যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি রবিবার বলেন, ‘‘পাশের দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করার জন্যই মহা ধুমধামের সঙ্গে এই জঙ্গি-বিরোধী তৎপরতা চালানো হচ্ছে। প্রতিরক্ষা চুক্তি থেকে নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য এই অভিনব কৌশল নিয়েছে সরকার।’’ জঙ্গিদের গ্রেফতার না করে কেন নিকেশ করা হচ্ছে, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। রিজভি বলেন, ‘‘লাশ দেখিয়ে প্রমাণ হয় না সেটা জঙ্গিদের না অন্য কারওর, হত্যা না আত্মঘাতী বিস্ফোরণ।’’
শাসক আওয়ামি লিগের এক শীর্ষ নেতা রিজভির মন্তব্যের জবাবে বলেন, ‘‘মানুষ সবই বোঝেন। শেখ হাসিনার ভারত সফর নিয়ে পাকিস্তানপন্থীরা কতটা শঙ্কিত, বিএনপি-র মন্তব্য তার প্রমাণ।’’ তিনি জানান, তাঁদের নেতৃত্ব এই সফর নিয়ে জলঘোলা চাইছেন না বলেই এ সব মন্তব্য বিচারের দায়িত্ব মানুষের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন। সরকারি ভাবে জবাব দেওয়া হচ্ছে না।
ওই নেতা বলেন, প্রতি বারই হাসিনার সফরের আগে বিএনপি ভারত-বিরোধী জিগির তোলে। জঙ্গি কার্যকলাপও বেড়ে যায়। বিএনপি নেতার মন্তব্য থেকেই পরিষ্কার— জঙ্গিদের প্রতি তাদের প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে। আওয়ামি লিগের ওই নেতা জানান, বাংলাদেশের ছাত্ররা যখন দেশজুড়ে জঙ্গিবাদ-বিরোধী কর্মসূচি পালন করছে, কঠোর হাতে জঙ্গি দমনের দাবি জানাচ্ছে, বিএনপি তখন অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলে জঙ্গিদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তাঁর কথায়, অভিযানে জঙ্গিদের গুলি-গ্রেনেডে হতাহত হওয়া পুলিশ ও সেনাদের প্রতিও বিএনপি-র যে কোনও শ্রদ্ধা নেই, রিজভির মন্তব্যে তা স্পষ্ট।