ওবায়দুল কাদের। ছবি: সংগৃহীত।
তিস্তা চুক্তি হচ্ছেই, কোনও বাধা নেই। বাংলাদেশের তরফে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই সেই চুক্তিতে সই করবেন। নির্বাচনের আগেই সেটা হবে। ক’দিন আগে পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই ঘোষণা করেছেন ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক সামলানোর পাশাপাশি, আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদকও তিনি। তাঁর এমন ঘোষণা স্বাভাবিক ভাবেই নতুন করে আশা জুগিয়েছে বাংলাদেশের মানুষকে।
বাংলাদেশ-ভারত দুটি দেশই নির্বাচনের দিকে ছুটছে। বাংলাদেশের নির্বাচন একটু আগে। তার পরেই ভারতের। ভোট মানেই শাসক দলের কাছে কৈফিয়ত দাবি। পাঁচ বছর কী করল তার জবাবদিহি চাই। বাংলাদেশ সরকার আওয়ামি লিগের হাতে। তাদের ভাল মন্দের বিচারের ভার ভোটারদের। অনেক ইস্যুর মধ্যে তিস্তার জল অন্যতম বড় ইস্যু। তা নিয়ে নিশ্চিন্ত করছেন সড়ক, পরিবহণ, সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দ্বর্থ্যহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন, তিস্তা চুক্তি নির্দিষ্ট সময়েই। ঢাকার মহাখালির সেতুভবনে বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকের পরেই চুক্তির কথাটা জানালেন কাদের। শ্রিংলার সঙ্গে এনিয়ে তাঁর যে কথা হয়েছে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কথা বলেই চুক্তি সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন কাদের। কাদের একজন দায়িত্ববান মন্ত্রী। দেশের স্বপ্নের প্রকল্পগুলো তাঁর হাতে। পদ্মা সেতু থেকে ঢাকার মেট্রো রেল সামলাচ্ছেন তিনি। সময় ধরেই দু'টি প্রকল্পের কাজ চলছে। নির্বাচনের আগে দু'টি প্রকল্প শেষ না হলেও নতুন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পরই কাজটা হয়ে যাবে। উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। পদ্মা সেতু হওয়া মানে বাংলাদেশের কোনও অঞ্চল আর বিচ্ছিন্ন থাকবে না। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের মাথায় উঠবে নতুন পালক। দীর্ঘ দিনের নির্বাসন কাটিয়ে উন্নয়নের মূল স্রোতে যুক্ত হবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশের ভোট প্রস্তুতিতে সন্তুষ্ট আমেরিকাও
ঢাকায় মেট্রো রেল হয়ে গেলে যানজটের যন্ত্রণা থেকে রেহাই। সমতলের সঙ্গে পাতালেও যাতায়াত। নিমেষে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছনোর সুযোগ। এক বছর আগে ১ জুলাই গুলশনে জঙ্গি হামলায় উন্নয়নকাজ ক্ষণিকের জন্য থমকালেও, ফের চালু হতে সময় লাগেনি। এখন সব কাজ তরতরিয়ে এগোচ্ছে। উন্নয়নের ডানায় ভেসে যাওয়া। এমন উজ্জ্বলতার ফাঁকেও একটাই অনিশ্চয়তার ছায়া। দেশ চেয়ে আছে তিস্তা চুক্তির দিকে, জলাভাবে রংপুর শুকোচ্ছে। সেচের জল নেই। নৌপরিবহণ বিঘ্নিত। সমাধান ভারতের হাতে। তিস্তার জল ছাড়লেই সমস্যা মিটবে। কাদের জানিয়েছেন, চুক্তির ব্যাপারে ভারত খুবই আন্তরিক। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজও ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তিস্তা চুক্তি হলে নির্বাচনে জয় সম্পর্কে আওয়ামি লিগ একশোভাগ নিশ্চিত হতে পারে। বাংলাদেশের মানুষ খুশিতে ভাসবেন। ক্ষমতায় ফেরাবেন হাসিনাকে। কাদের, শুধু দায়িত্বশীল মন্ত্রী নন, তিনি আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক। দলে হাসিনার পরেই তাঁর স্থান। উটকো মন্তব্য করে লোক হাসানোর পাত্র তিনি নন। তাঁর কথাতেই ভরসা রাখছেন দেশের মানুষ।