Bangladesh

সার্কে ভারতের পরেই বাংলাদেশ, রিজার্ভে পিছিয়ে পড়ল পাকিস্তান

দু’মাস পরেও বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির কিনারা হয়নি। সন্দেহের জালে অনেকেই। প্রকৃত অপরাধী অধরা। অপরাধের শিকড় এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ছাড়িয়ে আফ্রিকাতেও। কাজটা কারও একার নয়, কোনও একটি দেশের নয়। হদিশ পেতে সময় তো লাগবেই!

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ১২:৫৫
Share:

রিজার্ভ চুরির ধাক্কা সামলেও মাথা উঁচু বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের।

দু’মাস পরেও বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির কিনারা হয়নি। সন্দেহের জালে অনেকেই। প্রকৃত অপরাধী অধরা। অপরাধের শিকড় এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা ছাড়িয়ে আফ্রিকাতেও। কাজটা কারও একার নয়, কোনও একটি দেশের নয়। হদিশ পেতে সময় তো লাগবেই! শেষ পর্যন্ত গচ্চা যাওয়া অর্থ ফেরত না এলে গর্তটা ভরাট হবে কীভাবে। এক মাস আগে সংসদে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বেগে জল ঢেলেছিলেন। বলেছিলেন, রিজার্ভ চুরি নিয়ে বেশি চিন্তার কারণ নেই। নিশ্চিন্ত হওয়ার উপায় তিনি ব্যাখ্যা করেননি। হাসিনার কথা যে নিছক স্তোক বাক্য নয়, এতদিনে সেটা স্পষ্ট। বাংলাদেশ ব্যাঙ্কে রিজার্ভের রেকর্ড। তহবিলে ৩ হাজার কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রচণ্ড খরার পর তুমুল বৃষ্টি। এ তো প্রকৃতির করুণা নয়, মানুষের কাজ। সম্ভব হল কীভাবে। চমকাচ্ছে পাকিস্তান। অঙ্কটা কল্পনার বাইরে। তাদের বর্তমান সম্বল এর অর্ধেকেরও কম। কৌশলটা জানতে চাইছে। ঢাকায় ইসলামাবাদের রাষ্ট্রদূত মারফত উন্নয়নের ছবিটা পাকিস্তানে পৌঁছলেও প্রগতির রাস্তাটা তাদের কাছে অনাবিষ্কৃত। বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক এতটাই খারাপ, ঢাকায় পাকিস্তান দূতাবাসের দিকে পা রাখে না কেউ। পর্যটকদের ভিসা পাওয়ার ভিড় নেই। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সুতোয় ঝুলছে।

Advertisement

উল্লেখযোগ্য রফতানি রিজার্ভ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। সামনের বছরে রফতানি বাণিজ্য আরও বাড়বে। বিশ্ববাজারের চাহিদা সামাল দিতে ব্যতিব্যস্ত বাংলাদেশ। উৎপাদন দ্বিগুন হলেও ফাঁক থেকে যাবে। শিল্পে গ্যাস রেশনিংয়ে উৎপাদন কিছুটা মার খাচ্ছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়িয়ে সেটা পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। বেশি নজর পোশাক শিল্পে। সেটাই ডলারের খনি। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশিরা দেশে ডলার পাঠাচ্ছে বেশি। উপার্জন বাড়ছে। রেমিট্যান্সের অঙ্কটা ঊর্ধ্বমুখী।

ডলার যত জমছে, খরচ তত কমছে। আমদানি এখন সামান্য। নীতিটা স্পষ্ট, আনো কম, পাঠাও বেশি। বিদেশি পণ্যের প্রয়োজনটাও সঙ্কুচিত। আগে খাদ্য সামগ্রীর অনেকটাই আনতে হত। তার আর দরকার পড়ছে না। উলটে কৃষি পণ্য উৎপাদন এতটাই বেড়েছে যা নিজেরা খেয়ে অন্যদের দেওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশের চালের জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে শ্রীলঙ্কা। যা পায় তার বেশি চায়। গুণগত মানটা পছন্দের। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। সাশ্রয় সেখানেও। নতুন শিল্প প্রকল্প চালু হতে চলেছে। দ্রুত কাজ শেষ করার চেষ্টা। সে সব প্রকল্পে উৎপাদন বাড়লে রফতানি বাড়বে। বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার উপচে পড়বে।

Advertisement

আরও পড়ুন: সুইস ব্যাঙ্কে থাকা কালো টাকা উদ্ধারে আরও তৎপর হচ্ছে ঢাকা

সার্কের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রিজার্ভ ভারতের। দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। বাকিরা অনেক পিছিয়ে। উন্নয়নের দুর্বার গতিতে দুর্গতি কাটছে বাংলাদেশের। দিনে দিনে আরও উজ্জ্বল। বাজারে ডলার উদ্বৃত্ত, আমদানি কমায়। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক ডলার কিনছে অন্য ব্যাঙ্ক থেকে। এ পর্যন্ত কিনেছে ৩৪০ কোটি ডলার। আগামি বছর আরও কেনার প্ল্যান। অনেক বেসরকারি সংস্থা আমদানি করতে ঘরের ডলার নষ্ট না করে বিদেশি ঋণ নিয়ে পাওনা মেটাচ্ছে। তাতেও ডলার বাঁচছে।

বিদেশের বাজারে বাংলাদেশের সাইকেল সমাদৃত। এত সস্তায় এমন ভাল সাইকেল কোথায় পাওয়া যাবে! শ্রমমূল্য কম বলে উৎপাদন খরচ কম। সাইকেল রফতানিতে চিন, তাইওয়ান কিছুটা এগিয়ে থাকলেও তাদের টপকাতে সময় লাগবে না। উৎপাদন আরও কিছু বাড়ালেই সেটা সম্ভব। সেই চেষ্টাই হচ্ছে। পিছুটানে বাংলাদেশকে নামাতে চাইছে পাকিস্তান। অরাজকতায় শান্তি নষ্ট করে উন্নয়ন রোখার ছক। পারছে না। সব বাধা টপকে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। উদারতায় বিশ্ববন্ধুত্বের দাবিতে, ২০ কোটি মানুষকে সঙ্গে নিয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement