‘নিরাপদ সড়ক’-এর দাবিতে পড়ুয়াদের আন্দোলন। ছবি: রয়টার্স।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনকে সরকার ফেলার আন্দোলনে পরিণত করতে বাংলাদেশের বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের জোটশরিক মৌলবাদী জামাতে ইসলামি উঠে পড়ে লেগেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেই সঙ্গে ফেসবুক-টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে নানা ধরনের গুজব ছড়িয়ে আন্দোলনকারীদের মারমুখী করে তোলার চেষ্টাও হচ্ছে। এর জেরে শনিবার আন্দোলনের সপ্তম দিনে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় দুটি বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তাতে কয়েক জন শিক্ষার্থী আহতও হয়েছে।
মিশর, লিবিয়া বা টিউনিশিয়ার মতো ‘আরব বসন্ত’ আন্দোলন বাংলাদেশেও আমদানি করে সরকার ফেলে দেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য বিরোধী দলগুলি যে চেষ্টা চালাচ্ছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সে কথা আগেই জানিয়েছে। শনিবার একটি অডিও-ক্লিপিং ভাইরাল হয়। তাতে বিএনপি নেতা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও তাঁদের দলের কুমিল্লার এক ছাত্রনেতার কথোপকথন রয়েছে। বিএনপি নেতা ওই ছাত্রনেতাকে নির্দেশ দিচ্ছেন, ২০০-৫০০ লোককে ঢাকায় নিয়ে এসে যেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছাত্র-আন্দোলনের মোড়কে ফেসবুকে সরকার-বিরোধী প্রচারকে তুঙ্গে তোলার পরামর্শও দেন।
শনিবার এক অভিনেত্রী ফেসবুক লাইভ-এ এসে গুজব ছড়ান— ধানমন্ডিতে আওয়ামি লিগ অফিসের সামনে হামলা চালিয়ে চার শিক্ষার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। এক জনের চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে। এর পরেই এক দল আন্দোলনকারী আওয়ামি লিগ অফিসে হামলা চালাতে যায়। দলটির কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এর পরে ওই দলের নেতারা আন্দোলনকারীদের কয়েক জন মুখিয়াকে অফিসে আমন্ত্রণ জানান। পুলিশি পাহারায় আন্দোলনকারী কিশোরদের একটি দল আওয়ামি লিগ অফিস ঘুরে দেখে সেখানেই সাংবাদিক সম্মেলন করে। তারা জানায়, কয়েক জন লোক এসে তাদের জানিয়েছিল, জনা পাঁচেক ছেলেমেয়েকে আওয়ামি লিগের দফতরে আটকে রাখা হয়েছে। গুজবে কান না-দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে তারা।
শনিবার শাসক দলের সংগঠন ছাত্র লিগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও সম্পাদক ‘নিরাপদ সড়ক’-এর দাবিতে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের কাছে গিয়ে চকোলেট দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। ছাত্র লিগ নেতারা জানান, সরকার তাঁদের নয় দফা দাবির সবগুলিই মেনে নিয়েছে। সড়ককে নিরাপদ করা এবং চালকদের নিয়ম-শৃঙ্খলায় বাঁধতে সংসদে আইন পাশ করানো হচ্ছে। এখন আন্দোলনকারীদের উচিত সরকারকে সময় দিয়ে স্কুলে-কলেজে ফিরে যাওয়া। পুলিশপ্রধান ও মন্ত্রীরাও একই আবেদন জানিয়েছেন।