বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা। ছবি: সংগৃহীত।
২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে এক ভাষণে এই ঘোষণা করেছেন বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা।
তিনি জানান, ভোটের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাইয়ের শেষ দিন ২২ নভেম্বর এবং প্রার্থী প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘‘একাদশ জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করছি।’’
সিইসি বলেন, ‘‘দেশের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ এই কার্যক্রম, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় আপনাদের সহযোগিতা, সাহায্য ও সমর্থন কামনা করি। জাতির আগ্রহের এই জায়গায় সবাইকে নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সফল হব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য শপথ নিয়েছি। সংবিধান অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ সালের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।’’
আরও পড়ুন: সঙ্গে নাচতে নারাজ, সোনারপুরের পুজো মণ্ডপে মারধর করে মহিলাদের পোশাক ছিঁড়ল দুষ্কৃতীরা!
এই তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামি লিগ এবং এর সহযোগী বিভিন্ন সংগঠন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সমবেত হয় তারা। তফসিল ঘোষণার পরই শুরু হয় মিছিল। এই সময় বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে স্লোগান দেন নেতা-কর্মীরা।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ীই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। একই সঙ্গে তিনি সব দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। হানিফ বলেন, ‘‘আমরা আশা করি নির্বাচন কমিশন যে দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে, সে অনুযায়ী একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্দিষ্ট সময় ২৩ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা মনে করি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা হয়েছিল, দিনক্ষণ ঘোষণার মধ্যে দিয়ে তা কেটে গিয়েছে।’’
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় বাড়ছে টানাপড়েন, মুকুলের বিরুদ্ধে জোড়া অভিযোগ দায়ের জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের
এ দিকে তফসিল ঘোষণার পরই প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলাম, তফসিল ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু জনগণের আশা-আকাঙ্খার কথা চিন্তা না করেই তারা এক তরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান করার জন্য তফসিল ঘোষণা করেছেন এবং সরকারের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।’’ ফখরুল বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিক্রিয়া পরিষ্কার জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ব্যতীত কোনও নির্বাচন এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। সামনের ২০টি দলের মিটিং রয়েছে, ঐক্য ফ্রন্টের মিটিং রয়েছে। সেখানে আলোচনা করে আমরা আমাদের পরবর্তী বক্তব্য জানাব।’’
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণরে স্বাগত জানিয়েছে সংসদের প্রধান বিরোধীদল জাতীয় পার্টি। বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার পর গুলশনে নিজ বাসভবনে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে সুপারিশ করেছিলাম, তাতে তিনি আমল দিয়েছেন। সেনাবাহিনী চেয়েছি, তাও শুনেছেন। এই জন্য দেশবাসীও খুশি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যাও আগের চেয়ে ৩ লক্ষ বাড়ানো হয়েছে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে।’’