সাহস: চাকরিতে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। বুধবার ঢাকায়। ছবি: বাপি রায়চৌধুরী
চাকরিতে সংরক্ষণ পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে বিরক্ত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে জানিয়ে দিলেন— সব সংরক্ষণ বাতিল করা হল।
আর তাতেই আন্দোলনকারীরা ফাঁপরে। তাঁদের এক নেতা জানালেন, ‘‘আমরা তো সব কোটা তুলে দিতে বলিনি। শুধু সংস্কারের কথা বলেছি।’’ ওই নেতার আশঙ্কা, প্রধানমন্ত্রী এই ঘোষণা করায় ভুল বোঝাবুঝি বাড়বে। বেড়েওছে। ‘মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কম্যান্ড’ নামে একটি সংগঠন ঘোষণা করেছে, সরকারি চাকরিতে নির্ধারিত সংরক্ষণ ফিরিয়ে আনতে তারা এ বার আন্দোলনে নামবে।
সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ সংরক্ষণ কমানোর দাবিতে সাধারণ ছাত্ররা রবিবার সকাল থেকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্র শাহবাগের মোড়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। রাতে পুলিশ বলপ্রয়োগে তাঁদের উঠিয়ে দিতে গেলে সংঘর্য বেধে যায়। অন্তত ১০০ জন ছাত্র পুলিশের রবার বুলেট ও লাঠিতে আহত হন। অভিযোগ, শাসক দলের ছাত্র কর্মীরাও বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা চালায়। রাতের অন্ধকারে এক দল ছাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের উপাচার্যের বাড়িতে হামলা চালায়। এর পরে সোমবার গোটা দেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্ররা সর্বত্র রাস্তা অবরোধ করে। শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সংরক্ষণ পদ্ধতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও আন্দোলন দমেনি। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস চান।
এ দিন সংসদে প্রধানমন্ত্রী এই আন্দোলন নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আর যাতে আন্দোলন না হয়, কলেজ বন্ধ না হয়, রোগীরা রাস্তা অবরোধে আটকে না পড়েন, সে জন্য কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হল— এই আমার পরিষ্কার কথা!’’ তাঁর কথায়, প্রতি জেলার জন্য কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। তার পরেও জেলায় জেলায় রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন করা হচ্ছে। সুতরাং ধরে নিতে হবে জেলার ছাত্ররা কোটা চান না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘মেয়েদের জন্য সংরক্ষণ রয়েছে। দেখলাম তারাও আন্দোলনে নেমেছে, সংরক্ষণ তারা চায় না। আমি নারী, তাই আজ আমি খুশি। মেয়েরা সংরক্ষণ ছাড়াই ভাল করুক।’’ তিনি জানান— সরকার জনজাতি ও প্রতিবন্ধীদের অন্য ভাবে চাকরির ব্যবস্থা করবে।