বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশজুড়ে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দিয়ে হাসিনা বললেন, ইদের দিন যারা মানুষ খুন করে, তারা ইসলামের কেউ না। বৃহস্পতিবার ইদের নমাজের সময় শোলাকিয়ায় বোমা হামলার ঘটনাকে ঘৃণিত আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বলেছেন, ‘‘ইদের দিন নমাজ পড়তে না গিয়ে যারা পুলিশের ওপর হামলা চালায় আর মানুষ খুন করে, তারা কোনও দিন ইসলাম ধর্মে বিশ্বাস করে না।’’
বৃহস্পতিবার গণভবনে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন। এর আগে গণভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী ।
জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসীই। জঙ্গিরা জঙ্গিই। এদের কোনও ধর্ম নেই, দেশ নেই। জঙ্গি আর সন্ত্রাসী হিসেবেই এরা দেশের মানুষের কাছে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঘৃণিত। এদের ঠাঁই জাহান্নামে হবে। এরা কোনওদিন বেহেশত পাবে না। এটা কুরআন শরিফেরই বিধান। কারণ, নিরীহ ও নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করা কুরআন সমর্থন করে না।’’
শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সব মানুষকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিষয়ে সজাগ ও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘‘দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই। আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমি সব হারিয়েছি। আমার কিছু হারাবার নেই। দেশের মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করতে এসেছি। এদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাব। মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেব। শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে।’’
ইসলামের নামে জঙ্গি কার্যকলাপের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘‘অন্য ধর্মের কাছে ইসলাম ধর্মকে অবমাননাকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেওয়া কখনও আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। দেশবাসীকে আহ্বান জানাব, সকলে সচেতন থাকুন, নিজদের ওপর আস্থা রাখুন ও বিশ্বাস রাখুন। আমরা অবশ্যই সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী। আমাদের অভিযান সফল হবে। জনগণের নিরাপত্তার জন্য সরকার সবকিছুই করবে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।’’
গ্রাম, ইউনিয়ন এবং জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করে বিপথগামীদের চিহ্নিত করোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যারা জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত বা তার সমর্থক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অভিভাবকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সন্তানদের কেউ যদি বিপথগামী হয় তাহলে যেন তারা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন।’’
আরও পড়ুন: স্কুলে লুকিয়ে রয়েছে হামলাকারীরা, চলছে গুলির লড়াই: লাইভ আপডেট
শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময়ে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাইদ খোকন, আওয়ামি লিগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গির কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফারুক খান, কৃষি ও সময়ায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর প্রধানমন্ত্রী বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ কূটনীতিক ও বিচারপতিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
জঙ্গিবাদকে কেউ মদত দিলে তার দায় তাকেই নিতে হবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মহলও আমাদের সঙ্গে আছে।’’
সৌজন্যে: বাংলা ট্রিবিউন।