সব কোটা তুলে দেওয়ায় খুশি ঢাকা, ধন্দেও

আন্দোলনকারীদের এক নেতার বক্তব্য, সব রকমের কোটা তুলে দেওয়ার দাবি তাঁদের ছিল না। জনজাতি, প্রতিবন্ধী, নারী ও জেলার কোটা রাখার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঢাকা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫২
Share:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল চিত্র।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে সব রকমের কোটা তুলে দেওয়ার ঘোষণা করায় আন্দোলনকারীরা বৃহস্পতিবার তাঁকে সাধুবাদ জানালেন। তার পরে তাঁরা ৩২ নম্বর ধানমন্ডি রোডে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনের সামনে গিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আন্দোলনের জয় উদযাপন করলেন। কিন্তু তার পরেও ধন্দ যাচ্ছে না।

Advertisement

আন্দোলনকারীদের এক নেতার বক্তব্য, সব রকমের কোটা তুলে দেওয়ার দাবি তাঁদের ছিল না। জনজাতি, প্রতিবন্ধী, নারী ও জেলার কোটা রাখার পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। তাঁদের কোটার পরিমাণও যাথাক্রমে মাত্র ৫, ১, ১০ ও ১০ ভাগ। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা তাঁদের মতে অযৌক্তিক। এই কোটার অপব্যবহার হচ্ছে। সাধারণ মেধাবী ছাত্ররা সুযোগই পাচ্ছেন না। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নতুন প্রজন্মের অনেকে স্বাধীনতা-বিরোধী শক্তির অনুগামী হলেও এই কোটার সুযোগ নিচ্ছেন। শুধু মাত্র এই কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশ করার দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে সব কোটা তুলে দেওয়ার ঘোষণা করায় যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরাও সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন।

একই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া দু’টি ভিডিও আন্দোলনকারীদের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। এই দুই ভিডিয়োর একটিতে দেখা যাচ্ছে, বিএনপি নেতা তারেক রহমান কোনও একটি অনুষ্ঠানে বলছেন— মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের কোটা ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে হওয়া উচিত। অপর ভিডিয়োয় তারেক টেলিফোনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিএনপি-র অনুগত এক শিক্ষক নেতাকে বলছেন, সংরক্ষণ সংশোধনের দাবিতে সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলনে তাঁদের সহযোগিতা করা উচিত। তাঁদের সংগঠিত করার কাজে বিএনপির শিক্ষকদের নামা উচিত। ওই শিক্ষক নেতা মামুন আহমেদ স্বীকার করেছেন, তারেক রহমান তাঁকে ফোন করেছিলেন।

Advertisement

আন্দোলনকারীদের আশঙ্কা, সরকারকে বিপাকে ফেলতে বিএনপি-ই তাঁদের পথে নামিয়েছে— এটা প্রমাণ করতেই এই দুই ভিডিয়ো ছড়ানো হয়েছে। এর পরে সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁরা শেখ মুজিবের ছবি নিয়ে আন্দোলন করেছেন। কোনও রাজনৈতিক দলের কথায় নয়। রবিবার রাতে পুলিশ যখন তাঁদের তুলে দিতে লাঠি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে, একই সঙ্গে শাসক দলের ছাত্রকর্মীরা পিছন থেকে হামলা করে বলে অভিযোগ। বিক্ষোভকারীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলার ঘটনাটিও রহস্যময়। কারণ বিক্ষোভকারীরা কেউ মুখোশ পরে ছিলেন না। কিন্তু উপাচার্য়ের বাড়িতে হামলাকারীরা সকলেই মুখোশ পরে ছিল। সংসদে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। বিক্ষোভকারী নেতাদের আশঙ্কা, এ ঘটনায় তাঁদের মামলায় জড়ানো হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement