সতর্ক: ভোটের মুখে ঢাকার রাস্তায় সেনার নজরদারি। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
কনকনে ঠান্ডা। কুয়াশায় মুড়েছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে ভোটের উত্তাপ। রবিবার ভোট। প্রচার শেষ হওয়ার কথা আজ সকাল আটটায়। তবে কাল রাতের পর প্রচারে ইতি টেনেছে সব দলই। ২৪ তারিখ দেশের সর্বত্র সেনা নামলেও শুক্রবার থেকে রাজধানী ঢাকায় তাদের টহল দিতে দেখা গিয়েছে। নগরীর নানা জায়গায় চেক পয়েন্ট তৈরি করে সেনারা সন্দেহজনক গাড়ি তল্লাশি করছে। এর মধ্যেই শুক্রবার আলোচনার কেন্দ্রে বিরোধী বিএনপি নেতাদের একটি ফোনালাপের ফাঁস হওয়া অডিয়ো এবং নির্বাচন কমিশন উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কর্মীদের ফোনে আসা কয়েকটি এসএমএস।
গত ভোটে ডিজিট্যাল বাংলাদেশ গড়ার স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বার নির্বাচনী সভা করেছেন হাতে গোনা। বদলে এলাকায় এলাকায় পৌঁছে গিয়েছেন ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে। প্রায় সব জায়গায় তিনি বলেছেন, ‘‘৩০ ডিসেম্বর শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হবে এবং আওয়ামি লিগই সরকার গড়বে।’’
প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ২০১৪-য় গত নির্বাচন বয়কট করলেও এ বার ভোটের ময়দানে। এ বার তারা সাবেক আওয়ামি লিগ নেতা কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’-এর শরিক হয়েছে, আবার স্বাধীনতা-বিরোধিতার কারণে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অধিকার হারানো মৌলবাদী জামাতে ইসলামির এক ঘাঁক নেতাকেও প্রার্থী করেছে। তবে নেত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় কারাদণ্ড পেয়ে জেলে থাকায় বিএনপির প্রচার তেমন জমেনি। এ বার নির্বাচনে থাকা না-থাকা নিয়ে দলের নেতৃত্বের মধ্যে তীব্র মতভেদের বিষয়টি শুক্রবার ফাঁস হওয়া ফোনালাপেও প্রকট হয়েছে। দলের দুই শীর্ষ নেতা— স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমেদ ও ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু এই ফোনালাপে অভিযোগ করছেন, তাঁরা নির্বাচনে ওয়াকওভার দিয়ে সরকারকে বিপদে ফেলার পরামর্শ দিলেও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির তাঁদের ফোনই ধরছেন না। মহাসচিব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, এমন অভিযোগও করেছেন প্রাক্তন মন্ত্রী মওদুদ। বুলুর সঙ্গে ফোনে তাঁর কথা হয়েছে বলে মেনে নিয়েছেন মওদুদ।
এর মধ্যেই পুলিশ শুক্রবার জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের দফতর উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে কয়েক দিন ধরেই কর্মীদের ফোনে মেসেজ করা হচ্ছে। তাতে লেখা থাকছে, ‘এই নির্বাচন বন্ধ না-করলে মুজাজিদদের হাতে ভয়ঙ্কর পরিণতির জন্য তৈরি থাকুন। নির্বাচন কমিশন উড়িয়ে দিতে আমরা তৈরি।’ এতে কর্মীরা আতঙ্কিত। নির্বাচন ভবনের সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে। গত নির্বাচনে কমিশন ভবনের চত্বর ও কমিশনারদের বাড়িতে বোমা ফাটানো হলেও এমন হুমকি এই প্রথম।