কালিকাপ্রসাদের প্রয়াণে শোকবার্তা বাংলাদেশের
কালিকাপ্রসাদের সঙ্গীত পরিচালনায় ‘ভুবনমাঝি’ প্রথম ছবি। সে ছবির প্রিমিয়ারেই ঢাকায় এসেছিলেন গত ১ মার্চ। পরের দিনই চলে গিয়েছিলেন। ঢাকার সেই স্মৃতিতে প্রলেপ পড়ল না, মারা গেলেন কালিকাপ্রসাদ।
‘ভুবনমাঝি’র পরিচালক ফাখরুল আরেফিন তাঁর প্রয়াণ সংবাদ পেয়ে বললেন, ‘‘সোমবার রাতেও ফেসবুক মেসেঞ্জারে জানতে চেয়েছেন, ছবি কেমন চলছে? ছবির কোনও শিল্পীর সম্মান দক্ষিণা বাকি নেই। কেবল কালিকাদাকে জোর করেও দিতে পারলাম না। সঙ্গীত তৈরির সময় প্রায় ১৬দিন তাঁর সঙ্গে কাটিয়েছিলাম। খবরটা সব এলোমেলো করে দিল।’’
শোকে স্তব্ধ বাংলদেশেও
ঢাকায় ছবির প্রিমিয়ারে হাজির ছিলেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু। সেই রাতে কালিকাপ্রসাদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছিলেন। বললেন, ‘‘কত পরিকল্পনা, কত আয়োজন— সব ভেস্তে গেল। সেলিম আল দীনের পর কাউকে খুঁজে পেয়েছিলাম, যাঁর সঙ্গীত প্রজ্ঞা মুগ্ধ করে। তিনি আমাদেরই লোক ছিলেন। তাই তো গান বেঁধেছিলেন শাহবাগ নিয়ে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ, আমাদের ভাষার প্রতি তাঁর বিশ্বাস আর শ্রদ্ধা অগাধ ছিল। সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার উত্থান দেখে যখন বিচলিত বোধ করেছি, কালিকা তখন প্রবোধ দিয়েছে। বলেছে, দেখো বাংলাদেশ ঘুরে দাড়াঁবে। এই হচ্ছে কালিকাপ্রসাদ। যে নিজেকে সবসময় বাঙালি ভেবেছে।’’
আরও পড়ুন- গাড়ি উল্টে পড়ল নয়ানজুলিতে, প্রয়াত দোহারের কালিকাপ্রসাদ
আরও পড়ুন- মাটিতে পা রেখেই শহরের মঞ্চে লোকগান শোনাতে চেয়েছেন কালিকাপ্রসাদ
গণজাগরণ মঞ্চের আহ্বায়ক ইমরান এইচ সরকার সেই স্মৃতি মনে করে বলছিলেন, ‘‘দুই বাংলাকে সমান ভাবে ধারণ করতেন কালিকাপ্রসাদ।’’ একাত্তরের বীরাঙ্গনা ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিনীও সে কথাই বলছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রাণে শাহবাগ জেগেছিল বলেই তাঁর গান এসেছিল। কালিকা আমাদের স্বজন। তিনি আমাদের রাজপথের সাথী!’’ বাংলার নানান অঞ্চলের লোকগান নিয়েই তাঁর গবেষণা ছিল। জানালেন, ঢাকার জনপ্রিয় গানের দল ‘জলের গানে’র কনক আদিত্য। গত ৩০ ডিসেম্বরে জি বাংলার সারেগামাপা-র স্টুডিওতে কালিকাপ্রসাদের সঙ্গে কাটানো সময়ের কথা মনে করে কনক বলছেন, ‘‘তাঁর সঙ্গে কত কথাই বলেছি গান নিয়ে। বাংলা গান নিয়ে তাঁর গবেষণা নিয়ে। অপূর্ণ থেকে গেল সব।’’
আরও পড়ুন- মর্মান্তিক ধাক্কায় ভাষা হারিয়ে ফেলেছে বাংলার সঙ্গীতমহল
আরও পড়ুন- ওর কাজটা আর শেষ হল না