Bangladesh News

এ বছর বিদেশ যাবেন ৮ লাখ বাংলাদেশি কর্মী

কাজের লোকের খাতির সব দেশেই। যেখানেই যাবে আদর। অর্থের অভাব হয় না। নতুন সৃজনে যশও মেলে। সেটা ভাল করেই জানেন বাংলাদেশের বাঙালি। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও যে বোঝেন না তা নয়। সাত সমুদ্দুর পেরোতে তাঁরাও পা বাড়িয়ে।

Advertisement

অমিত বসু

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৭ ১৫:০৫
Share:

কাজের লোকের খাতির সব দেশেই। যেখানেই যাবে আদর। অর্থের অভাব হয় না। নতুন সৃজনে যশও মেলে। সেটা ভাল করেই জানেন বাংলাদেশের বাঙালি। পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও যে বোঝেন না তা নয়। সাত সমুদ্দুর পেরোতে তাঁরাও পা বাড়িয়ে। পুরোন সেন্টিমেন্ট মাড়িয়ে উন্নত অর্থসংস্থানের সন্ধান। ঘরকুনো হয়ে বসে না থেকে দেশ-বিদেশে ছড়িযে পড়া। যেখানে কাজ সেখানেই নিজের ঘর সংসার। অতিরিক্ত উপার্জন দেশে পাঠানো। যাতে পরিবারের অন্যদের আর্থিক সংকট না থাকে। যাঁরা যান, তাঁরা নিজের দেশেরও উপকার করেন। রেমিট্যান্সে বিদেশি মুদ্রার পুঁজি বাড়ায়। অর্থনৈতিক ভিতটা শক্ত হয়। পণ্যের চেয়ে শ্রম রফতানিতে সুবিধে বেশি। ঝক্কি পোয়াতে হয় না। বিদেশে কাজে যোগ দিলেই রেমিটেন্স নিশ্চিত। দেশের ব্যাঙ্কে উড়ে আসবে বিদেশের ডলার।

Advertisement

আরও পড়ুন

রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে রাখাইন কমিশনের প্রতিনিধি দল ঢাকায়

Advertisement

অনেকে অর্থ পাঠানোর বাঁকা পথ ধরেন। ব্যাঙ্কে না পাঠিয়ে হুন্ডিতে পাঠান। এতে ‘লাভ’ একটু বেশি। ডলারে দু'এক টাকা বেশি পাওয়া যায়। ব্যাঙ্কে ডলারের রেটটা কম বলেই অনেকে এটা করেন। তাঁরা বোঝেন না, এতে আখেরে ক্ষতি তাঁদের। হুন্ডির টাকাটা সাদা থাকে না, কালো হয়ে যায়। কাজটাও অবৈধ। এটা বন্ধ করার ব্যবস্থা হচ্ছে। মোবাইল ব্যাঙ্কিং এজেন্ট যাতে দেশের বাইরে থেকে টাকা পাঠাতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক প্রবাসী মন্ত্রণালয়। অন্য দিকে ব্যাঙ্কে রেমিট্যান্স পাঠানোর খরচ এক শতাংশ কমান হচ্ছে।

বাংলাদেশে রেমিট্যান্স থেকে আয় সব চেয়ে বেশি। এক কোটি মানুষ বিদেশে কর্মরত। তাঁরা যে সবাই চাকরি করছেন এমন নয়। ব্যাবসাও করেন। বহু দেশের শহরে বাংলাদেশিদের নিজস্ব দোকান গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশিরা দল বেঁধে সেখানে দোকানপাট চালান। সে সব জায়গা মিনি বাংলাদেশের চেহারা নিয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশি রেস্তোরাঁর আকর্ষণ বিদেশিদের কাছে খুব বেশি। বাঙালি রান্না খেতে তাঁরা সেখানে লাইন দেন। মাছের কারি তাঁদের কাছে খুবই লোভনীয়। এটা জনপ্রিয় করেছে সিলেটি রাঁধুনীরা। কলকাতায় আইটিসি সোনার বাংলায় দেখেছি, সিলেটিদের আয়োজনে মাছের কারি ফেস্টিভ্যালে হাজির ভারতে ব্রিটিশ দূতাবাসের প্রতিনিধিরা। চেটেপুটে খাচ্ছেন মাছের নানান আইটেম। লন্ডনে বাংলা বাজারে বাঙালি রেস্তোরাঁয় সব সময় ইংরেজদের ভিড়। সব ফেলে ইলিশ, পাঙ্গাস, পারশে, চিংড়ির বিভিন্ন পদের স্বাদ নিচ্ছেন। স্বদেশে পাঠান তাঁদের রেমিট্যান্সের অঙ্কটাও বাড়ছে।

আরও পড়ুন

হাসিনাকে গ্রাম ঘুরিয়ে স্বপ্নের উড়ানে পথের ভ্যানচালক

বিদেশে কর্মব্যস্ত বাংলাদেশিরা, ব্যবসা বা চাকরিতে আয় করছেন যথেষ্ট। বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার সংখ্যাটা ২০১৬-তে ৩৬ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরে সংখ্যাটা ছিল ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৩১। এবার সেটা ৮ লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। সংখ্যাটা বাড়লেও রেমিট্যান্স কমেছে। বৈধ ভাবে টাকা না পাঠানোর কারণেই সেটা হচ্ছে। বিদেশি মুদ্রা উপার্জনে আয়করে ছাড় অনেকটাই। কম আয়ে কর দিতেই হয় না। রেমিট্যান্স যাতে সোজা পথে বাংলাদেশে ঢোকে তার ব্যবস্থা হচ্ছে।

শ্রম রফতানি বাড়াতে বাংলাদেশ সরকার আগ্রহী। তাঁরা যাতে বিদেশের কাজে কোথাও অসুবিধেয় না পড়েন সে দিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। বিদেশ যাওয়ার খরচ অনেক সময় বেড়ে যায় এজেন্সিকে বেশি টাকা দেওয়ার কারণে। সৌদি আরব যেতে খরচ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এজেন্সির পাল্লায় পড়ে সেটা গিয়ে দাঁড়ায় ৮ লাখ টাকায়। মালয়েশিয়া যেতে ব্যয় ৮৪ হাজার টাকা। এজেন্সি নেয় ছ'লাখ। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিদেশ যাত্রায় কর্মীদের পকেট কাটার চেষ্টাটা বন্ধ করতে সক্রিয়। সরকার মনে করে, বিদেশে কাজ করে যাঁরা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করছেন, তাঁদের বিদেশ যাত্রায় খেসারত দিতে হবে কেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement