ভূত চতুর্দশীর দিনে হালকা রূপকথার গল্প হয়ে যাক। ঠিক রূপকথার গল্প নয়, বলা ভাল রূপকথার বাড়ি। একটু দূরেই লেক অন্টারিয়ো। গাড়িতে মিনিট ১৫। হেঁটে আধ ঘণ্টাটাক।
সেই হিসাব করেই বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে টরোন্টোর এই এলাকায় একটা দুর্গ বানিয়ে ফেলেন হেনরি পেলাট এবং তাঁর স্ত্রী লেডি মেরি। নাম দিলেন কাজা লোমা।
ছবির মতো সুন্দর বাড়ি। দূর থেকে দেখলে মনে হয় রূপকথার কাসল। ভিতরটিও তাই। এত সুন্দর বাড়িতে থাকলে বেরোতেই ইচ্ছা করে না।
এভাবেই কয়েকটা বছর কাটিয়ে ফেলেন যুগলে। বাড়ির প্রতি দম্পতির প্রেমও বাড়তে থাকে। শুধু দম্পতি কেন, এই বাড়ির মোহে আকৃষ্ট হয়েছিলেন আরও একজন। বাড়ির এক পরিচারিকা।
এই বাড়ির মোহ যে কত মারাত্মক তা টের পাওয়া গেল অচিরেই। ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা গেলেন সেই পরিচারিকা। কিন্তু প্রতি রাতেই নাকি দেখা যেত তাঁকে।
সাদা কাপড়ে ঢেকে তিনি নাকি ফিরে আসতেন। ক্রমশ কাজা লোমা নিয়ে ছড়িয়ে পড়তে লাগল ভৌতিক কাহিনি। আর সেই ভূতের নাম হল ‘লেডি ইন হোয়াইট’।
ক্রমে ক্রমে আরও বছর খানেক কেটে গেল। এক সময়ে মারা গেলেন হেনরি এবং মেরি। মারা গেলেন বটে, কিন্তু বাড়ির মায়া নাকি তাঁরাও ছাড়তে পারলেন না। থেকে গেলেন ভূত হয়ে। এমনই বলেন স্থানীয়রা।
বর্তমানে এটি টরোন্টোর অন্যতম জনপ্রিয় ভূতের দেখার জায়গা। প্রতি বছর বহু পর্যটক এখানে ঘুরে যান। এমনকী ইন্টারনেটে সার্চ করলেও কাজা লোমার গোস্ট ট্যুরের কথা জানা যেতে পারে।
তবে শুধু ভূত দেখার জন্যই নয়, প্রাচীন এই গথিক আর্কিটেকচার দেখতেও প্রতি বছর এখানে আসেন বহু মানুষ। এর প্রতিটি থামে খোদাই রয়েছে ইতিহাস।
এক সময়ে ইউরোপ থেকে এই ভূখণ্ডে এসে বাসা বেঁধেছিলেন মানুষ। সেই ইতিহাসের টুকরোও দেখতে পাওয়া যাবে এখানে গেলে। সেটাও তো আসলে ভূত দর্শনই। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।