ভূতের গল্প মানে শুধুই ভয়ের গল্প নয়। তাতে মিশে থাকতে পারে বেদনার ইতিহাসও। জাপানের হিমেজি কাসলের ঘটনাটাও ঠিক তাই। ভূতচতুর্দশীর মরসুমে এই গল্প তাই ভয় দেখাবে, নাকি মন খারাপ করে দেবে- তা আগে থেকে বলা কঠিন।
সপ্তদশ শতকে তৈরি হয়েছিল জাপানের হিমেজি কাসল। দূর্গের আনাচে কানাচে আজও ছড়িয়ে আছে তার ভৌতিক অতীত। এমনকী এর প্রতিটি ঘরের ছাদেও রয়েছে অদ্ভুত নকশা। অনেকে মনে করেন, আদি যুগে জাপানে বহু মানুষ পিশাচের ভয় পেতেন। পিশাচ তাড়ানোর জন্য অদ্ভুত নকশা কাটা হত। সে রকম নকশাই আঁকা আছে এই ঘরগুলোর ছাদে।
কিন্তু ভূতের গল্পটা এর থেকে আলাদা। এই দূর্গে নাকি প্রতি রাতে ফিরে আসে এক পরিচারিকার ভূত। আর এসে সোজা ঢোকে রান্নাঘরে। গুনতে থাকে খাবারের থালা। দশ নম্বর থালাটা নাকি তার চাই-ই চাই! যে থালা সে কোনও দিনই খুঁজে পাবে না। কিন্তু কেন পাবে না? জানতে হলে ফিরে যেতে হবে সেই সপ্তদশ শতকে।
শোনা যায়, কাসলের এক ক্ষমতাবান ব্যক্তির নাকি এক পরিচারিকার উপরে নজর ছিল। কিছুতেই বাগে আনতে পারছিলেন না তাঁকে। শেষ পর্যন্ত ওই পরিচারিকার নামে চুরির অপবাদ দেওয়া হয়। বলা হয়, ওই ব্যক্তির ১০টি থালার মধ্যে থেকে একটি নাকি তিনি চুরি করেছেন। আসলে একটি থালা সরিয়ে রাখা ছিল অন্য জায়গায়। পরিচারিকা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে বার বার থালা গুনতে থাকেন। কিন্তু কিছুতেই দশ নম্বর থালাটা পান না। শেষ পর্যন্ত তিনি আত্মহত্যা করেন।
লোকে বলে, সেই মহিলার আত্মাই নাকি প্রতি রাতে আজও ফিরে আসেন কাসলে। গুনতে বসেন থালা। এবং আজও পান না। তাঁর কান্নার শব্দ নাকি এখনও শোনা যায় দূর্গের রান্নাঘরে। খুব গভীর রাতে। যখন সবাই প্রায় ঘুমিয়ে।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।