''কি করি আর ভেবে না পাই , পথ হারিয়ে কোন বনে যাই ...'' নিত্য প্রয়োজন হোক বা ব্যক্তিগত, গ্যাজেট কেনার প্রয়োজন হলে মনের অবস্থা কিছুটা এ রকমই হয়ে ওঠে। গ্যাজেটের সাগর পাড়ি দিয়ে মুক্তো, মানে নিজের সাধ্যের মধ্যে সাধপূরণ করাটা একটা বোর্ডের পরীক্ষার চেয়ে কম নয় মোটেও। ইচ্ছে আইফোন কেনার, অথচ বাজেট সীমিত; ঠিক এইখানেই শুরু দ্বন্দ্ব। মনের মাঝে চলতে থাকে '' যা না চাইবার তাই আজি চাই গো/ যা না পাইবার তা কোথা পাই গো''...
বিশ্বায়নের জোয়ারে, প্রযুক্তি জড়িয়ে গেছে রোজকার জীবনের সঙ্গে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে গ্যাজেট ছাড়া জীবনটাকে কল্পনা করা বোধ হয় সত্যি অসম্ভব। পাশাপাশি, বিগত দু-তিন বছরে করোনা মহামারি অনেক কিছু উপলব্ধি দিয়ে গেছে সকলকেই। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খরচে তাই অবধারিত হয়েছে লাগাম। প্রশস্ত হয়েছে পুনর্ব্যবহারের পথ। যাকে বলে রিসাইক্লিং।
এখন আপনাদের মনে হতেই পারে গ্যাজেটের পুনর্ব্যবহার আবার কী ভাবে সম্ভব! আসলে 'রিফার্বিস্ড গ্যাজেট' চেন শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপী। পৃথিবীকে আগামীর জন্য সবুজ রেখে যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে। যতটা ইকো ফ্রেন্ডলি করা যায়! কিন্তু টাকা দিয়ে পুরনো ফোন বা ল্যাপটপ কিনে কোনও বিপদ হবে না তো!
'রিফার্বিস্ড গ্যাজেট' বা পুরনো গ্যাজেটই সংস্কার করে নতুন করে নেওয়া গ্য়াজেট কেনার আগে মুলত এই ভয়টাই কাজ করতে থাকে মনে মনে। এই ভয়ের উৎস হল বিষয়টি সম্পর্কে কম জানা।
রিকন্ডিশন্ড ইলেকট্রনিক্সের চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে ই-কমার্স ব্যবসা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অসংগঠিত ভাবে গড়ে উঠেছে। কিন্তু সংগঠিত বিক্রেতারাও আছেন। বছর পাঁচেক আগে তাদের উপস্থিতি ছিল মাত্র ১ শতাংশ। ২০২১ সালে সেটি 8 শতাংশে বেড়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সেটি বেড়ে হবে ২০ শতাংশ। এই অগ্রগতি প্রকৃতিতে কার্বনের পরিমাণ কিছুটা হলেও কম করবে বলে মনে করা হছে।
এ তো গেল উদ্দেশ্যের কথা। এতে ক্রেতাদের সুবিধা হচ্ছে কতটা ?
দামে কম, মানে ভাল
নতুন ভাবে তৈরি করা পুরনো গ্যাজেটগুলো গ্রাহকরা তুলনামূলক কম টাকায় কিনতে পারছে। পুরনো জিনিসকেই একেবারে নতুন করার এই প্রযুক্তি, নতুন প্রযুক্তির তুলনায় অনেক বেশি সাশ্রয়ী হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। প্রকৃতপক্ষে, যে সমস্ত প্রডাক্ট চালানোর সময় সামান্য ক্ষতিগ্রস্থ হয় বাণিজ্য প্রদর্শনীতে এবং স্টোরগুলিতে প্রদর্শিত হয়, অথবা ক্রেতারা ফেরত পাঠান, সেগুলিকেই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মেরামত করে আধুনিক প্রযুক্তিতে আপডেট করা হয় এবং তার পর বিক্রির জন্য দেওয়া হয়।
পরিবেশ এবং গ্রাহকদের স্বার্থ
যে ইলেকট্রনিক গ্যাজেটগুলিকে একদম নতুন করে আপগ্রেড করা হয়, মেরামতের কারণে সেগুলোর মেয়াদ বাড়ছে। এই কারণে বহু আইটি সংস্থা প্রকৃতপক্ষে রিকন্ডিশন্ড ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপে বিনিয়োগ করছে। প্রযুক্তির পরিমার্জিত ব্যবহার পরিবেশ এবং গ্রাহকদের স্বার্থ দুই রক্ষা করতে সক্ষম হচ্ছে। পড়ুয়ারা পড়াশোনার জন্যও এগুলো ব্যবহার করতে পারছে।
তবে নজরে রাখতে হবে:
গ্রাহক তখনই লাভবান হবেন, যখন তাঁরা একটা কোম্পানির কাছ থেকে কিনবেন। তবে কেনার সময় ওয়ারেন্টি এবং কেনার পরে কতদিন কী কী সুবিধে পাবেন, সেটা জেনে নিতে হবে।
এই প্রতিবেদনটি 'আনন্দ উৎসব' ফিচারের একটি অংশ।