Bama Kali of Indragacha Birbhum

পুজোর দিনেই মায়ের চক্ষুদান, রং! অনন্য রীতিতে পুজো পান ইন্দ্রগাছার বামা কালী

কালীপুজোয় এক অন্য সাজে সেজে ওঠে এই গ্রাম। প্রতি বছর ইন্দ্রগাছার কালীপুজো নিয়ে মানুষের উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে। কারণ, এখানকার পুজোর রীতিনীতি একেবারে আলাদা।

Advertisement

আনন্দ উৎসব ডেস্ক

 বীরভূম শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ২১:৪৮
Share:

ইন্দ্রগাছার বামা কালী

সমগ্র বীরভূমকেই কালী ক্ষেত্র বললে খুব ভুল কিছু বলা হবে না। কারণ এই জেলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অসংখ্য শতাব্দীপ্রাচীন কালীমন্দির। সে সব মন্দির এতটাই জনপ্রিয় যে, দর্শনার্থীদের ভিড় লেগেই থাকে সব সময়ে। বিশেষত কালীপুজোয় আরও সুন্দর ভাবে সেজে ওঠে তারা। প্রাচীন মন্দিরগুলির ইতিহাস ও অলৌকিক কাহিনি মানুষকে যেন আরও বেশি আকর্ষণ করে। তেমনই এক কাহিনি রয়েছে বীরভূমের ইন্দ্রগাছা মন্দিরের বামা কালীকে ঘিরে।

Advertisement

যে দিকে চোখ যায়, লাল মাটি আর ধান ক্ষেত। তারই মাঝে সুন্দর এক গ্রাম ইন্দ্রগাছা, যা লোকমুখে ইনগাছা নামেও পরিচিত। এখানেই বামা কালীর মন্দির। কালীপুজোয় এক অন্য সাজে সেজে ওঠে এই গ্রাম। প্রতি বছর ইন্দ্রগাছার কালীপুজো নিয়ে মানুষের উন্মাদনা থাকে তুঙ্গে। কারণ, এখানকার পুজোর রীতিনীতি একেবারে আলাদা।

কথিত, বীরভূমের হরকুনার গভীর জঙ্গলে সাধনা করতে গিয়ে এক দিন সাধক রামকানাই এই কালী মায়ের সাক্ষাৎ পান। তাঁর সেই রূপ তিনি সঙ্গে সঙ্গে নিজের কাছে থাকা থালায় এঁকে নেন। মায়ের সেই জীবন্ত রূপের ছবি দেখে বানানো হয় তাঁর মাটির মূর্তি। এই মা কালীই বামা কালী। কথিত, যে থালায় মায়ের জীবন্ত রূপ দেখে ছবি এঁকেছিলেন সাধক, সেই থালা গোপনে সযত্নে রেখে দিয়েছেন ইন্দ্রগাছা গ্ৰামের বাসিন্দারা। লোকমুখে শোনা যায়, ইন্দ্রগাছার এই বামাকালী ৫০০ বছর ধরে পূজিত হয়ে চলেছেন। পুজোর প্রার্থনা মন্ত্র নিজেই লিখেছিলেন সাধক। যা আজ রাম কানাইয়ের পুঁথি নামে পরিচিত হয়ে আছে। যে পুঁথির অর্থ বহু শিক্ষিত মানুষও উদ্ধার করতে পারেননি।

Advertisement

কিন্তু কেন এই বামা কালী নাম? তারও নেপথ্যে আছে এক বিশেষ কারণ। সাধারণত যে কোনও কালীমূর্তিকেই শিবের গায়ের উপরে ডান পা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু ইন্দ্রগাছার কালী থাকেন বাঁ-পা দিয়ে। সেই থেকেই বামা কালী নাম পরিচিতি পায়।

পুজোর রীতিনীতিও বেশ ভিন্ন। এখানে প্রতিমার গায়ে রং করা ও চক্ষুদানের কাজ হয় পুজোর দিনেই। প্রতিমা গড়া হলেই কাঁধে চাপিয়ে মূল মন্দিরে নিয়ে আসা হয় কালীকে। প্রায় ৬০ জন মানুষ ৪০ ফুট লম্বা কাঠের বেদিতে চাপিয়ে প্রতিমাকে মূল মন্দিরে আনার পরে প্রতিষ্ঠা করা হয় মাত্র ৩ মিনিটে। শুধু এখানেই শেষ নয়। কথিত, মন্দির চত্বরে পালা গান শোনানো হয় মাকে। সেই গান শুনে তবেই পুজো গ্রহণ করেন তিনি। বহু বছর ধরে এই নিয়মেই চলে আসছে পুজো। যাকে ঘিরে কালীপুজোয় গভীর রাতে মানুষের ঢল নামে ইন্দ্রগাছা গ্রামে।

এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement