রেডিয়ো ও নস্টালজিয়া
কাশ ফুল, শিউলি ফুল আর নীল আকাশের ছোঁয়ায়ে মেতে উঠেছে প্রাণ। বাড়ির অন্দরমহল সেজে উঠছে পুরনো ধুলো ঝেড়ে। এই সবের মধ্যেই উঁকি দিচ্ছে পুরনো একটি যন্ত্র যেটি সারা বছর অবহেলায় পড়ে থাকে এক কোণে। হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন। আমাদের অত্যন্ত কাছের এবং প্রিয় রেডিয়ো।
যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের ছোটবেলা। স্কুল ফেরত বিকেলের অনুষ্ঠান কিংবা রবিবারের ছুটির ঘন্টা। সকালে আকাশবাণীতে বড়দের খবর শোনা এবং পুজোর গন্ধ – সব মিলিয়েই আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়েছিল এই রেডিয়ো। কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছে এক সময়ের জনপ্রিয় গণমাধ্যম রেডিয়ো।
রেডিয়ো মানেই নস্টালজিয়া। তবে আমাদের বড়বেলার সঙ্গে সঙ্গেই ক্রমশ হারিয়ে গিয়েছে এই যন্ত্র। জায়গা দখল করেছে আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ নানা যন্ত্র। কিন্তু এক বার ভেবে দেখুন তো, আমরা কি সত্যিই একেবারে জন্য ভুলে গিয়েছি রেডিয়োকে? আগের মতো নিয়ম করে হয়ত শোনা হয়ে ওঠে না, ধুলো পরিষ্কার করে যত্ন করা হয়ে ওঠে না।
কিন্তু বছরের একটা দিন তাকে ছাড়া ঠিক উৎসবের আমেজ তৈরি হয় না – মহালয়া! অন্য কোনও প্রযুক্তিগত গ্যাজেট বা অ্যাপে নয়, মহালয়ায় ভোরের আলো ফোটার আগে বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠে ‘আশ্বিনের শারদ প্রাতে…’ শুনতে রেডিয়োর জুড়ি মেলা ভার। এর এক অন্য আবেগ রয়েছে, রয়েছে এক অনন্য অনুভূতি।
শুধুমাত্র প্রৌঢ়রাই নয়, এই প্রজন্মের একাংশের কাছে মহালয়া শোনার ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের তুলনায় রেডিয়ো প্রথম পছন্দ। এই প্রসঙ্গে কলেজ ছাত্রী শ্রেয়সীর কথায়, ‘আমরা সাধারণত এখন রেডিয়ো শুনি না। মাঝে মধ্যে এফএম শোনা হয়। তবে মহালয়া রেডিয়োতেই শোনা চাই। ভোর বেলা রেডিয়োতে মহালয়া শোনার মধ্যে অদ্ভুত এক আনন্দ আছে যেটা ইউটিউবে পাওয়া যায় না। এতে জড়িয়ে রয়েছে নস্টালজিয়া জড়িয়ে রয়েছে।’
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের অংশ।