প্রতীকী চিত্র
এই বাংলায় মা দুর্গার পুজোর রীতি সুপ্রাচীন। যখন মূর্তি পুজোর চল ছিল না, তখনও নবপত্রিকার পুজো হত। সেটাই ছিল দুর্গাপুজো। কারণ, মা দুর্গা প্রকৃতির দেবী। পরবর্তীতে মূর্তি পুজো শুরু হলে নবপত্রিকাই হয়ে ওঠে কলাবৌ। শাস্ত্রমতে মহাসপ্তমীর দিন এই কলাবৌয়ের পুজোর মাধ্যমেই মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। এ কিন্তু স্রেফ ধর্মীয় আচার নয়। মানুষের জীবনে গাছের প্রয়োজনীয়তা কতখানি, তার প্রচারের এক অনন্য মাধ্যমও বটে। বলা ভাল, এটাই বোধহয় দুর্গাপুজোর সবচেয়ে পুরনো থিম।
বিশ্বজুড়ে থাবা ছড়াচ্ছে দূষণের ভয়াল অসুর। গাছকে দেবী দুর্গা রূপে কল্পনা করলে তার নিধন সম্ভব। এই ভাবনা থেকেই লালাবাগান নবাঙ্কুরের এ বছরের নিবেদন “লালাবাগানে নবাঙ্কুর”।
সমগ্র পরিকল্পনা এবং তার নির্মাণে শিল্পী প্রশান্ত পাল। আনন্দবাজার অনলাইনকে শিল্পী জানান, অসুররূপী দূষণের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করতে গাছের কোনও বিকল্প নেই। প্রকৃতিকে বাঁচাতে গাছের ভূমিকা কতখানি, সেই সচেতনতার অভাবে গাছ বাঁচাতে সে ভাবে উদ্যোগী হয় না মানুষ। নবাঙ্কুর অর্থাৎ নব অঙ্কুর রোপণ ও যত্নে লালনপালন চারপাশে বাড়বে সবুজ। বিনাশ ঘটবে দূষণ অসুরের। এ ভাবেই তাই প্রকৃতিকে রক্ষা করার অঙ্গীকার নিয়েছে লালাবাগান নবাঙ্কুর। প্রায় সাড়ে সাতশো গাছ নার্সারিতে বড় করে অবশেষে তাদের দিয়েই মণ্ডপসজ্জার পরিকল্পনা করেছেন লালাবাগান এর অধিবাসীবৃৃন্দ। মা দুর্গার মূর্তিটিও গড়া হচ্ছে কাঠ দিয়েই।
পুরুলিয়ায় বৃক্ষ রোপণ করে একটি জঙ্গল নির্মাণ করেছেন দুখু মাঝি। রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই পরিবেশপ্রেমীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পুজোর উদ্বোধনে। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে মানিকতলা মোড়ের দিকে এগোলে ডান হাতে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিট থেকে দেশবন্ধু পার্কের পথে এই পুজো। টালা পার্কের দিক থেকে এলে রাস্তার বাঁ দিকে পড়বে রাজা দীনেন্দ্র স্ট্রিট।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।