প্রস্তুতি চলছে
শহুরে বাস্তবতার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে নান্দনিক নিসর্গ। আকাশছোঁয়া বাড়ি তৈরির তাড়াহুড়োয় কাটা পড়ছে গাছের পর গাছ। হারাতে বসেছে সবুজ। অথচ গাছ এবং মানুষের সম্পর্ক কত নিবিড়। কত বৈদিক। ভ্রমণপিপাসু বাঙালিকে চিরকালই বেঁচে থাকার রসদ জুগিয়ে এসেছে প্রকৃতির কোলে কাটিয়ে আসা ছুটির স্মৃতি। কংক্রিটের ভিড়ে হাঁসফাঁস করতে থাকা জীবনে সবুজের সমারোহ ফিরিয়ে আনার আবেদন নিয়েই তাই দমদম পার্ক সর্বজনীনের পুজোয় এ বারের থিম ‘মানব জমিন’। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাসটি থেকে অনুপ্রাণিত।
শিল্পী দেবতোষ করের নিপুণ শিল্পে ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে ভাবনা। প্রায় সাড়ে সাতশো গাছে সাজানো মণ্ডপ জুড়ে থাকবে চিত্রকল্পে থাকবে নিসর্গ প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার আবেদন। সঙ্গে সহনশীলতা ও সহমর্মিতার বার্তা। শিল্পীর কথায় উঠে এল শহুরে মানুষের গাছ কাটার প্রবণতার কথা। শহরাঞ্চলে প্রকৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। তার খোঁজে মানুষ ছুটছে দূরদূরান্তে। ফিরে আসছে একবুক রূপ-রং-সৌন্দর্য নিয়ে। থিমের মূল বিষয় গাছ। তার উপরে এসে পড়বে বাহারি আলো। মানব ও জমিনের সম্পর্কের চিরন্তন নকশিকাঁথা উঠে আসবে দমদম পার্কের থিমে।
বিগত বছরগুলিতে মহামারী ও দূরে দূরে আতঙ্কে বাঁচা শিখিয়েছে প্রকৃতির মাহাত্ম্য। শহুরে আধুনিক জীবনে প্রকৃতিই যে একমাত্র বাঁচার ওষুধ, মানুষ হয়তো বুঝতে শুরু করেছে। মণ্ডপেও আবহ সঙ্গীতে তাই চক্রপাণি দে-র সুর মূর্ছনায় পাখি গেয়ে উঠবে, পাতা ঝরবে, আর মানুষ প্রকৃতি এক দেহে লীন হবে।
ভিআইপি রোড বা যশোর রোড, যে কোনও দিক থেকেই এই পুজো মণ্ডপে পৌঁছতে পারবেন। দমদম পার্ক পোস্ট অফিসের ঠিক পাশের রাস্তায় দমদম পার্ক সর্বজনীন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।