নিউ টাউন বিসি ব্লক
শহর কলকাতার পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত নতুন শহর নিউটাউনও প্রস্তুত হচ্ছে দেবীবরণে। নিউটাউন অ্যাকশন এরিয়া ১-এর অন্যতম বি সি ব্লকের পুজো এ বার দশম বর্ষে পড়ল। রবিবার ২০ আগস্ট মহাসমারোহে সম্পন্ন হল তাদের খুঁটিপুজো।
এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ব্লকের আবালবৃদ্ধবনিতা সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন পুজো মণ্ডপে। ব্লকের আবাসিকবৃন্দের পাশাপাশি বিশেষ অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ঘোষণা করা হয় এ বছরের পুজোর থিম, ‘বাংলার মুখ’।
বাংলা সংস্কৃতি বৈচিত্র্যময়। বাংলা লোকসংস্কৃতিতে মণিমানিক্যের কোনও অভাব নেই। কালের নিয়মে বেশ কিছু লোকশিল্প আজ লুপ্তপ্রায়। এ ধরনের কিছু হারিয়ে যাওয়া লোকশিল্পের আঙ্গিকে মণ্ডপ ও পারিপার্শ্বিক সাজানোর পরিকল্পনা করেছে এই ব্লক। মণ্ডপ ভাবনায় রয়েছেন তরুণ শিল্পী প্রীতম আচার্য্য, সঙ্গে আলোকসজ্জায় সুদীপ্ত সরকার।
এ ছাড়া প্রতি বছরের মতো এবারও বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আবাসিকদের পুজোর কয়েক দিন একত্রিত করার পরিকল্পনা করেছেন উদ্যোক্তারা। গত বছরের মতো এবারও বি সি ব্লকের পুজোর অন্যতম আকর্ষণ বিভিন্ন জেলার হস্তশিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত মেলা। পটচিত্র, নকশি কাঁথা, আলপনা, বাউলগান, পুতুল নাচ, গ্রাম— বাংলার হস্তশিল্প এই সমস্ত শিল্প সহযোগে ‘বাংলার মুখ’ সুস্পষ্ট ভাবে দর্শকের মন ছুঁয়ে যেতে পারবে, এমনটাই আশা পুজো উদ্যোক্তা থেকে আবাসিক সকলেরই।
গত বছরের মতো প্রচুর জনসমাগম সামাল দিতে বেশ কিছু অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন পুজো কমিটি। সমাজ সচেতনতার কথা মাথায় রেখে এ বারও প্লাস্টিক বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। প্রবীণ নাগরিক ও সংগঠনের সভাপতি গৌরীপ্রসাদ পাইন বললেন, ‘ধর্ম, বর্ণ ও বয়স নির্বিশেষে সব শ্রেণির মানুষ পুজোর ক’টা দিন এক সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন আমাদের এখানে।’
সমাজ সচেতনতার জন্য গত বছর আমরা 'সুচেতনা শারদ সম্মান' পেয়েছিলাম। এবারও সমাজসচেতনতায় কোনো খামতি নেই আমাদের।" প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী শ্রী শেখর কুমার পালের তৈরী প্রতিমাতেও থাকছে চমক, থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রায় ১৫ফুট উচ্চতার এই প্রতিমায় থাকছে বাংলার লোকশিল্পের ছাপ।
সংগঠনের সম্পাদক শ্রী সৌম্যদীপ মাইতির কথায় "নিউটাউনে একটি বা দুটি পুজোর বয়স দশ বছর বা তার অধিক। সেই হিসাবে আমরা নিউটাউনের পুরোনো পুজো গুলোর একটা। প্রায় ৫০০র বেশি মানুষ এই পুজোর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। দশম বর্ষ উপলক্ষ্যে দর্শকদের জন্য বেশ কিছু চমক থাকছে আমাদের তরফ থেকে। নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জন্য থাকবে বেশ কিছু মজার ইভেন্ট।
এছাড়াও আমরা ডিজিটাল প্রমোশন শুরু করেছি তাই অবশ্যই চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেজে।" সিদ্ধা গ্রূপ, বাইজু, লিউপীনের মতো ব্যবসায়িক সংস্থাগুলি গত বছর বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণ করেছিল এই পুজোয়। এদের পাশাপাশি এ বছর আরও বেশ কিছু কর্পোরেট সংস্থাকে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত করার আশা রাখছেন বিজ্ঞাপনের দায়িত্বে থাকা পূজা কমিটির সদস্যবৃন্দ। NKDA-এর বিচারে গত বারে তৃতীয় স্থান লাভ করা এই পুজো এ বারও নিউটাউনের পুজোর ভিড়ে তার নিজস্ব জায়গা করে নিতে পারবে বলেই আশা রাখি।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।