মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের নিয়ে আসা হয় মা ক্ষ্যাপা কালীর মন্দিরে, তাঁদের সুস্থতার কামনায়। মানুষের বিশ্বাস, মায়ের কাছে নিয়ে এলেই তাঁরা সুস্থ হয়ে ওঠেন।
কথিত, সারদামণির বৌদি মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন। তিনি তাঁর বৌদিকে নিয়ে এই মন্দিরে আসেন এবং দেবীর আশীর্বাদে তিনি সুস্থও হয়ে উঠেছিলেন।
হুগলির আরামবাগের তিরোলে ক্ষ্যাপা কালীর মন্দিরে এই ভাবেই গত ৭০০ বছর ধরে দেশ এমনকি বিদেশ থেকেও বহু মানুষ আসেন সুস্থতার কামনায়।
এখানকার অধিষ্ঠিত দেবী আসলে সিদ্ধেশ্বরী কালী। মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের এইখানে সুস্থতার জন্য নিয়ে আসা হয় বলে মাকে ক্ষ্যাপা কালী নামে ডাকা হয়।
এই মন্দির তিরোলের জমিদার বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত। মায়ের প্রতিষ্ঠিত বালা রোগীদের হাতে পরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর কিছু নিয়ম মানতে বলা হয়।
পুজোর বেলপাতা রোগীর পরিবারের হাতে দিয়ে তাঁদের বলা হয় সকালে কিছু খাওয়ার আগে এই বেলপাতা যেন রোগীকে খাওয়ানো হয়।
ভক্তদের বিশ্বাস মাকে পুজো দিলেই তাঁদের আপনজন সুস্থ হয়ে উঠবেন।
২০ থেকে ২৫ বছর অন্তর বদলানো হয় এই দেবীমূর্তি। কালীপুজোর সময়ে তারকেশ্বরের দশঘড়ায় বিশ্বাস পরিবারে অনুষ্ঠিত দুর্গাপুজোয় দুর্গাপ্রতিমাকে পরানো মুকুট ক্ষ্যাপাকালীর মাথায় পরানো হয়।
শুধু তাই নয়, দীপাবলির সময় দেবীর প্রিয় সানাই বাজানোরও রীতি রয়েছে এখানে।
জনশ্রুতি রয়েছে, এক সাধু দেবীর পুজো করতেন। কিন্তু তিনি যখন মৃত্যুপথযাত্রী হলেন, তখন তাঁকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন পুজোর দায়িত্বভার তিরোলের তৎকালীন জমিদার চক্রবর্তী পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য। তার পর থেকে তিরোলেই পূজিত হয়ে আসছেন দেবী। এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।