ভবানীপুরের মল্লিক বাড়ি, কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম। তাঁর কারণ যে শুধুই বনেদিয়ানা তা নয়। বরং আরও দুটি নাম। কোয়েল মল্লিক এবং রঞ্জিত মল্লিক।
ভবানীপুরের মল্লিক বাড়ির পুত্র মিষ্টভাষী সজ্জন টলিপাড়ার নায়ক রঞ্জিত মল্লিক। প্রত্যেক বছর পুজোয় স্ব-পরিবারে হাজির হন কিংবদন্তী এই অভিনেতা। এ বছরেও তার অন্যথা নেই।অষ্টমীতে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে মেয়ে, জামাই নাতি সকলে।
মল্লিক বাড়ির পুজো এখন শত বর্ষের পথে। এই বছর তাদের পুজোর ৯৯ বছর। বাড়ির পুজোয় সবার সঙ্গে সময় কাটাতে ভালাবাসেন বাবা-মেয়ে দু'জনেই।
বৈষ্ণব মতে পুজো হয় মল্লিক বাড়িতে। মহালয়ার পরের দিন মা চণ্ডীর ঘট বসে এবং শুরু হয় চণ্ডী পুজোর। বাড়ির সবাই নিরামিষ খান এই সময়।
প্রতিমা এক চালা এবং ডাকের সাজে সজ্জিত। দশমীর দিনে বাড়ির সধবা মহিলারা এক মাকে বরণ করেন, সিঁদুর খেলেন।
তার পর রীতি মেনে কাঁধে করে প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় ঘাটে। বিসর্জন হয় মায়ের। আর সব কিছুতেই উপস্থিত বাবা এবং মেয়ে। অর্থাৎ রঞ্জিত মল্লিক এবং কোয়েল মল্লিক।
বাবার পরণে সাদা পাঞ্জাবি। চোখে চশমা। সদা হাসিমুখে চির নবীন রঞ্জিত মল্লিক দশমীতে ধরা দিলেন সবার সামনে।
মেয়ের পরনে লাল পাড় সাদা শাড়ি। সঙ্গে হাই বোট নেক ব্লাউজ। কানে ঝুমকো কানের দুল। গলায় হার। প্রথাগত লুকে আত্ম বিশ্বাসী কোয়েল এলেন ক্যামেরাতে।
সিঁদুর খেলেছেন বাড়ির সবার সঙ্গে। যার ছাপ স্পষ্ট চোখে মুখে। মাথায় চওড়া করে সিঁদুর। গাল দু জোড়াও রাঙা হয়ে আছে সিঁদুরে।
প্রথা মেনেই দশমীতে বিসর্জন হয় মল্লিক বাড়ির প্রতিমা। বিসর্জনে উপস্থিত ছিলেন বাড়ির জামাই নিসপাল সিংহ। তাঁরও পরণে ছিল পাজামা পাঞ্জাবি।
বৃষ্টির মধ্যেও ছাতা মাথায় দিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে রঞ্জিত কোয়েল। ব্যস্ত বিসর্জনে। নিসপাল সিংহ ও তাই।
অবশেষে সন্ধে নামার মুখে বিসর্জন হয় প্রতিমার। সবার মনে তখন বিষাদের সুর। আর কেবল অপেক্ষা, আসছে বছরের! এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।